ওয়ারশ নিরাপত্তা ফোরামে তাইওয়ানের উপ-সেনাবাহিনী গোয়েন্দা প্রধান হসিহ জিহ-শেং বলেছেন যে ইউক্রেনের পরাজয় তাইওয়ানের উপর চীনের আগ্রাসনকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে। তিনি জোর দিয়ে বলেন যে তাইওয়ান ইউক্রেনের সংঘাত থেকে প্রতিরক্ষা কৌশল শিখতে পারে এবং চীন ও রাশিয়ার মধ্যে ক্রমবর্ধমান সামরিক সহযোগিতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। হসিহ জিহ-শেং উল্লেখ করেছেন যে ইউক্রেনের বিজয় তাইওয়ানের জন্য প্রতিরক্ষা প্রস্তুতির ক্ষেত্রে মূল্যবান শিক্ষা প্রদান করতে পারে। তিনি আরও বলেন যে তাইওয়ান ইউক্রেনীয় যুদ্ধক্ষেত্র থেকে অনেক কিছু শিখতে পারে যা সামগ্রিক প্রস্তুতি উন্নত করতে সহায়ক হবে।
এই মন্তব্যগুলি এমন এক সময়ে এসেছে যখন তাইওয়ান তার নিজস্ব প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য সচেষ্ট রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, তাইওয়ান জুলাই ২০২৫-এ তার বৃহত্তম হান কুয়াং সামরিক মহড়া শুরু করেছে, যেখানে ২২,০০০ রিজার্ভ সেনাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। চীন এবং রাশিয়ার মধ্যে ক্রমবর্ধমান সামরিক সহযোগিতা তাইওয়ানের জন্য একটি বড় উদ্বেগের কারণ। এই দুই দেশ যৌথ মহড়া এবং সামরিক প্রযুক্তি বিনিময়ের মাধ্যমে তাদের সম্পর্ক জোরদার করছে। কিছু বিশ্লেষক মনে করেন যে এই সহযোগিতা চীনকে তাইওয়ান দখলের ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করতে পারে। বিশেষ করে, রাশিয়া চীনকে একটি এয়ারবোর্ন ব্যাটালিয়ন প্রশিক্ষণ এবং সরঞ্জাম সরবরাহ করতে সম্মত হয়েছে, যা তাইওয়ানের উপর সম্ভাব্য আক্রমণাত্মক ক্ষমতা বাড়াতে পারে।
ওয়ারশ নিরাপত্তা ফোরাম, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম যেখানে নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বৈশ্বিক নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন। এই ফোরামে হসিহ জিহ-শেং-এর অংশগ্রহণ তাইওয়ানের বৈশ্বিক নিরাপত্তা অংশীদারদের সাথে সক্রিয়ভাবে যুক্ত হওয়ার একটি প্রচেষ্টা। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে ইউক্রেন রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে জয়লাভ করবে।
ইউক্রেন যুদ্ধ তাইওয়ানের জন্য প্রতিরক্ষা কৌশল নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তাইওয়ান ইউক্রেনের মতো অপ্রতিসম যুদ্ধ এবং শহুরে যুদ্ধের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিচ্ছে। তারা রিজার্ভ বাহিনীর গুরুত্ব এবং সাইবার যুদ্ধের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষার প্রয়োজনীয়তাও অনুধাবন করেছে। তাইওয়ান তার প্রতিরক্ষা বাজেট বৃদ্ধি করেছে এবং ড্রোন ইউনিট স্থাপন করছে, যা ইউক্রেনীয় যুদ্ধের অভিজ্ঞতা থেকে অনুপ্রাণিত। এই পদক্ষেপগুলি তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা প্রস্তুতি জোরদার করার জন্য একটি বৃহত্তর প্রচেষ্টার অংশ। তাইওয়ানের উপ-সেনাবাহিনী গোয়েন্দা প্রধানের এই বক্তব্যগুলি ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে তাইওয়ানের নিরাপত্তা পরিস্থিতির গুরুত্ব তুলে ধরেছে। ইউক্রেন যুদ্ধের ফলাফল এবং চীন-রাশিয়ার মধ্যে ক্রমবর্ধমান সামরিক সহযোগিতা তাইওয়ানের ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা কৌশলের উপর গভীর প্রভাব ফেলতে পারে।