জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ হাইতিতে ক্রমবর্ধমান গ্যাং সহিংসতা মোকাবেলা এবং নিরাপত্তা পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে একটি রেজোলিউশন ১২টি 'হ্যাঁ' ভোট এবং ৩টি ভোটদানে বিরত থাকার (রাশিয়া, চীন ও পাকিস্তান) মাধ্যমে গ্রহণ করবে। এই সিদ্ধান্তটি মাল্টিন্যাশনাল সিকিউরিটি সাপোর্ট (MSS) মিশনকে একটি 'গ্যাং দমন বাহিনী' (GSF)-তে রূপান্তরিত করেছে, যেখানে ৫,৫০০ জন পর্যন্ত কর্মী অন্তর্ভুক্ত থাকবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং পানামা সহ-স্পন্সর করা এই প্রস্তাবে পুলিশ, সামরিক এবং বেসামরিক সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত করার কথা বলা হয়েছে। GSF স্বাধীনভাবে এবং হাইতির জাতীয় পুলিশের সাথে সমন্বয় করে কাজ করবে।
এই সম্প্রসারণটি হাইতির নিরাপত্তা পরিস্থিতির গুরুতরতাকে তুলে ধরেছে। পূর্বে MSS মিশনে প্রায় ১,০০০ জন কর্মী ছিল এবং এটি জুন ২০২৪ থেকে কার্যকর ছিল। নতুন GSF মিশনের লক্ষ্য হলো গ্যাং সহিংসতা দমন করা, মানবিক সহায়তা প্রদান সহজতর করা এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করা।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (HRW) এই মিশনের জন্য পর্যাপ্ত তহবিল, কর্মী এবং সরঞ্জাম নিশ্চিত করার উপর জোর দিয়েছে। তারা আরও বলেছে যে শক্তিশালী মানবাধিকার সুরক্ষা ব্যবস্থা থাকা উচিত এবং এটিকে একটি পূর্ণাঙ্গ জাতিসংঘ অপারেশন হিসেবে পরিচালনা করা উচিত যাতে ব্যাপক সমর্থন এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত হয়। HRW উল্লেখ করেছে যে পূর্ববর্তী আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপগুলিতে অপব্যবহার, তদারকির অভাব এবং দুর্বল জবাবদিহিতার মতো ভুলগুলি পুনরাবৃত্তি এড়াতে হবে।
জাতিসংঘের তথ্য অনুসারে, ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে হাইতিতে গ্যাং সহিংসতার কারণে অন্তত ৩,১৩৭ জন নিহত হয়েছে এবং প্রায় ১.৩ মিলিয়ন মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এই উদ্বেগজনক পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য GSF-এর মতো একটি শক্তিশালী বাহিনীর প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হচ্ছে। তবে, মিশনের কার্যকারিতা এবং দীর্ঘমেয়াদী সাফল্য নির্ভর করবে এর পর্যাপ্ত অর্থায়ন, প্রশিক্ষণ এবং মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল আচরণের উপর। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাইডেন প্রশাসনের অধীনে এই মিশনের জন্য ৩৮০ মিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থায়ন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছে এবং কানাডা ৪০ মিলিয়ন ডলার আর্থিক সহায়তা ঘোষণা করেছে। এই মিশনটি হাইতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, যা দেশটির স্থিতিশীলতা এবং পুনর্গঠনের পথে সহায়ক হতে পারে।