আগামী ১৫ই আগস্ট আলাস্কায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের আগে, জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্জ এবং ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিসহ ইউরোপীয় নেতারা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে একটি ভার্চুয়াল বৈঠকে ইউক্রেনের যুদ্ধবিরতির শর্তাবলী নিয়ে আলোচনা করেছেন। এই আলোচনাটি রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত সমাধানের উপর আলোকপাত করেছে। মঙ্গলবার, ১৩ই আগস্ট, ২০২৫ তারিখে অনুষ্ঠিত এই ভার্চুয়াল কলে, মের্জ ইউক্রেনের শান্তি আলোচনায় দেশটির অপরিহার্য ভূমিকার উপর জোর দিয়ে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতিকে প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে প্রস্তাব করেন। তিনি জানান যে ইউক্রেন আঞ্চলিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে ইচ্ছুক, তবে রাশিয়ার দখলদারিত্বের কোনো আইনি স্বীকৃতি প্রত্যাখ্যান করেছে। মের্জ আরও বলেন যে, যদি রাশিয়া আলাস্কা শীর্ষ সম্মেলনে গঠনমূলকভাবে অংশগ্রহণ না করে, তবে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় দেশগুলোর উচিত মস্কোর উপর চাপ বৃদ্ধি করার বিষয়টি বিবেচনা করা। তিনি পুতিনের সঙ্গে পূর্বের আলোচনাগুলো অকার্যকর ছিল বলে উল্লেখ করেন, কারণ সেগুলো প্রায়শই রাশিয়ার সামরিক পদক্ষেপ বৃদ্ধির দিকে পরিচালিত করেছিল।
ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন যে, পুতিন যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে ইউক্রেনকে ডনেটস্ক অঞ্চলের বাকি ৩০% ছেড়ে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন, যা তিনি সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছেন। জেলেনস্কি পুনর্ব্যক্ত করেন যে ইউক্রেন তার নিয়ন্ত্রিত কোনো অঞ্চল ছাড়বে না, কারণ এটি অসাংবিধানিক এবং ভবিষ্যতের রাশিয়ার আক্রমণের জন্য একটি সুবিধাজনক স্থান হবে। তিনি উল্লেখ করেন যে, যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে শান্তি আলোচনায় ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং ইউরোপের অংশগ্রহণ অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি, যা কিয়েভের প্রধান দাবি। আলাস্কার এই শীর্ষ সম্মেলনের স্থান হিসেবে নির্বাচন করা হয়েছে এর ঐতিহাসিক তাৎপর্যের কারণে, যা রাশিয়ার নৈকট্য এবং অতীত মার্কিন-রাশিয়া সম্পর্কের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। জয়েন্ট বেস এলমেন্ডরফ-রিচার্ডসন একটি গুরুত্বপূর্ণ শীতল যুদ্ধের সামরিক স্থাপনা হিসেবে পরিচিত। এই সম্মেলনটি ট্রাম্প এবং পুতিনের মধ্যে ২০১৯ সালের পর প্রথম বৈঠক। ইউরোপীয় নেতারা এই আলোচনাকে ঐক্যবদ্ধ বলে অভিহিত করেছেন এবং বলেছেন যে ট্রাম্প ইউক্রেনের স্বার্থ রক্ষা করার ব্যাপারে একমত হয়েছেন। তবে, কিছু নেতা এখনও উদ্বিগ্ন যে ট্রাম্প পুতিনের কাছে নতি স্বীকার করতে পারেন। জার্মানি, ফ্রান্স এবং যুক্তরাজ্যের মতো দেশগুলো একটি চুক্তিতে ইউক্রেনের জন্য শক্তিশালী নিরাপত্তা গ্যারান্টি এবং রাশিয়ার উপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানিয়েছে, যদি পুতিন যুদ্ধবিরতিতে সম্মত না হন। এই কূটনৈতিক প্রচেষ্টাগুলো ইউক্রেন সংঘাতের একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানের আশা জাগিয়েছে, যা এই পরিস্থিতির গুরুত্বকে তুলে ধরেছে।