আলাস্কায় ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক: ইউক্রেন শান্তি আলোচনার ঐতিহাসিক মুহূর্ত

সম্পাদনা করেছেন: Татьяна Гуринович

আগস্ট ১৫, ২০২৫ তারিখে আলাস্কার অ্যাঙ্করেজে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে একটি শীর্ষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে চলেছে, যা ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার পথে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এই ঐতিহাসিক সম্মেলনের মূল লক্ষ্য হলো ইউক্রেনের চলমান সংঘাত নিরসন এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার সম্ভাব্য উপায় অনুসন্ধান করা। ১৮৬৭ সাল পর্যন্ত রাশিয়ান সাম্রাজ্যের অংশ থাকা আলাস্কার অ্যাঙ্করেজ শহরকে এই বৈঠকের স্থান হিসেবে নির্বাচন করা হয়েছে, যা ভৌগোলিক ও ঐতিহাসিক উভয় দিক থেকেই তাৎপর্যপূর্ণ। জয়েন্ট বেস এলমেন্ডর্ফ-রিচার্ডসন (JBER) নামক সামরিক ঘাঁটি এই সম্মেলনের আয়োজন করছে, যা স্নায়ুযুদ্ধের সময়কালে উত্তর আমেরিকার প্রতিরক্ষায় একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ছিল এবং এর ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটও বিশেষভাবে পরিচিত।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই আলোচনায় ৭৫% আস্থা প্রকাশ করেছেন যে একটি চুক্তিতে পৌঁছানো সম্ভব, তবে তিনি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির অংশগ্রহণ ছাড়া চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ সম্ভব নয় বলে উল্লেখ করেছেন। জেলেনস্কির অনুপস্থিতি ইউরোপীয় মিত্রদের মধ্যে উদ্বেগের কারণ হয়েছে, যারা একটি ন্যায়সঙ্গত ও দীর্ঘস্থায়ী শান্তির জন্য ইউক্রেনের অংশগ্রহণ অপরিহার্য বলে মনে করে। জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্জ এই বৈঠককে ইউক্রেন শান্তি প্রক্রিয়ায় অগ্রগতি সাধনের এক অনন্য সুযোগ হিসেবে অভিহিত করেছেন। এই সম্মেলনের অন্যতম প্রধান আলোচ্য বিষয় হলো ইউক্রেনের ভূখণ্ড সংক্রান্ত সমস্যা। রাশিয়া ইউক্রেনের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ ভূখণ্ড দখল করে রেখেছে এবং শান্তি চুক্তির অংশ হিসেবে তারা আরও ভূখণ্ডের দাবি জানাচ্ছে। ইউক্রেন অবশ্য বর্তমান যুদ্ধরেখায় যুদ্ধবিরতির পক্ষে এবং পরবর্তীতে অধিকৃত অঞ্চলের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছে। এছাড়া, রাশিয়া কর্তৃক ইউক্রেনীয় শিশুদের জোরপূর্বক স্থানান্তরের ঘটনায় পুতিনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির বিষয়টি আলোচনার টেবিলে আসতে পারে। ইউরোপীয় মিত্ররা, যেমন জার্মানির চ্যান্সেলর মের্জ, এই বৈঠকের মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন, তবে তারা ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার উপর জোর দিয়েছেন এবং যেকোনো শান্তি চুক্তিতে ইউক্রেনের অংশগ্রহণ ও তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি বলে মনে করেন। এই শীর্ষ বৈঠকটি কেবল ইউক্রেন যুদ্ধের ভবিষ্যৎই নির্ধারণ করবে না, বরং মার্কিন-রাশিয়া সম্পর্ক এবং বৃহত্তর আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতার উপরও গভীর প্রভাব ফেলবে বলে আশা করা হচ্ছে।

উৎসসমূহ

  • Deutsche Welle

  • Axios

  • Time

  • Reuters

আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?

আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।