১৫ আগস্ট, ২০২৫ তারিখে, ইউক্রেন জুড়ে রাশিয়ার ব্যাপক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হয়। একই সময়ে, আলাস্কায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ শীর্ষবৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যার মূল উদ্দেশ্য ছিল ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠা করা। তবে, এই শীর্ষবৈঠক কোনো সুনির্দিষ্ট চুক্তিতে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়, যা শান্তি আলোচনার ক্ষেত্রে একটি বড় ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে। ইউক্রেনের বিমান বাহিনী জানিয়েছে যে রাশিয়া ৮৫টি ড্রোন এবং একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। এর মধ্যে ইউক্রেনীয় বাহিনী ৬১টি ড্রোন ধ্বংস করতে সক্ষম হয়েছে। এই হামলাগুলো ইউক্রেনের সুমি, ডনেটস্ক, চেরনিহিভ এবং ডিনিপ্রোপেট্রোভস্ক অঞ্চলে কেন্দ্রীভূত ছিল। ইউক্রেনের জেনারেল স্টাফের তথ্য অনুযায়ী, সারাদিনে বিভিন্ন যুদ্ধক্ষেত্রে মোট ১৩৯টি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
অন্যদিকে, আলাস্কার জয়েন্ট বেস এলমেন্ডর্ফ-রিচার্ডসনে অনুষ্ঠিত ট্রাম্প-পুতিন শীর্ষবৈঠক থেকে কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি আসেনি। উভয় নেতা বৈঠকের পর "অগ্রগতি" এবং "পারস্পরিক বোঝাপড়া"র কথা বললেও, যুদ্ধবিরতির বিষয়ে কোনো নির্দিষ্ট চুক্তি হয়নি। পুতিন জানিয়েছেন যে নির্দিষ্ট শর্তে শান্তি আলোচনায় তিনি আগ্রহী, কিন্তু ট্রাম্প রাশিয়ার পদক্ষেপের সমালোচনা করা থেকে বিরত থাকেন এবং তাদের সম্পর্ককে "প্রগতিশীল" বলে অভিহিত করেন। এই ঘটনাপ্রবাহ ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার জটিলতাকে তুলে ধরে। যদিও কূটনৈতিক আলোচনা চলছিল, অন্যদিকে সামরিক কার্যকলাপও অব্যাহত ছিল, যা এই সংঘাতের একটি দ্বিমুখী চিত্র উপস্থাপন করে। ঐতিহাসিকভাবে, রাশিয়া ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেন আক্রমণ শুরু করে, যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘাত হিসেবে পরিচিত। এই আক্রমণ পূর্ব ইউক্রেনের ডনবাস অঞ্চলে ২০১৪ সাল থেকে চলা সংঘাতের একটি বড় সম্প্রসারণ ছিল। এই শীর্ষবৈঠক থেকে কোনো সুস্পষ্ট ফলাফল না আসায়, আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন যে এই যুদ্ধ বন্ধ করার প্রক্রিয়া আরও দীর্ঘায়িত হতে পারে। ইউক্রেনীয় আইনপ্রণেতারাও মনে করেন যে পুতিন এই বৈঠকের মাধ্যমে কেবল সময় কিনেছেন এবং প্রকৃত শান্তি প্রতিষ্ঠার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।