রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের জন্য ন্যাটো-এর আর্টিকেল ৫-এর অনুরূপ নিরাপত্তা গ্যারান্টি প্রদানের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় মিত্রদের অনুমতি দিতে সম্মত হয়েছেন। আলাস্কায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং প্রেসিডেন্ট পুতিনের মধ্যে একটি শীর্ষ সম্মেলনের পর এই যুগান্তকারী সিদ্ধান্তটি এসেছে, যা ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানের লক্ষ্যে একটি সম্ভাব্য শান্তি চুক্তির পথ খুলে দিতে পারে। এই গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়নের পরিপ্রেক্ষিতে, ইউরোপীয় নেতারা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সাথে ওয়াশিংটন ডিসিতে একটি বৈঠকে মিলিত হচ্ছেন। জার্মানি, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, ইতালি এবং ফিনল্যান্ডের নেতারা এই বৈঠকে অংশগ্রহণ করছেন, যা শান্তি ও নিরাপত্তা গ্যারান্টি নিয়ে আলোচনাকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হবে।
ইউরোপীয় নেতারা ইউক্রেনের উপর অন্যায্য শর্ত চাপিয়ে দেওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং শক্তিশালী নিরাপত্তা প্রতিশ্রুতি ও আঞ্চলিক আলোচনায় পূর্ণ অংশগ্রহণের পক্ষে সওয়াল করছেন। মার্কিন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ এই অগ্রগতিকে "গেম-চেঞ্জার" হিসেবে বর্ণনা করেছেন, যা ইউক্রেনকে পূর্ণ ন্যাটো সদস্যপদ ছাড়াই সম্মিলিত প্রতিরক্ষা নিশ্চিতকরণের সুযোগ করে দেবে। এটি একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন, কারণ রাশিয়া প্রথমবারের মতো ইউক্রেনের জন্য এমন একটি ব্যবস্থার নীতিগতভাবে সম্মতি জানিয়েছে। এই সম্মতির মাধ্যমে রাশিয়া ইউরোপের অন্যান্য দেশের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন না করার এবং কোনো ভূমি দখল না করার আইন প্রণয়নেরও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লেয়েন এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং বলেছেন যে ইউরোপ এই সম্মিলিত প্রতিরক্ষা গ্যারান্টিতে তাদের অংশীদারিত্ব করতে প্রস্তুত। তবে, ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি যেকোনো আঞ্চলিক ছাড়ের বিষয়ে রাশিয়ার দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন, যা শান্তি চুক্তির পথে একটি বড় বাধা হিসেবে রয়ে গেছে। ইউক্রেন তার আঞ্চলিক অখণ্ডতার বিষয়ে দৃঢ় অবস্থানে রয়েছে, যা আন্তর্জাতিকভাবেও সমর্থিত। ইউরোপীয় নেতাদের আসন্ন ওয়াশিংটন বৈঠকটি এই মতপার্থক্যগুলো নিরসনে এবং একটি টেকসই শান্তি চুক্তির সম্ভাব্যতা নির্ধারণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তারা ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং দীর্ঘমেয়াদী সহায়তার উপর জোর দিচ্ছেন, যাতে একটি ন্যায্য ও স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা করা যায়। এই আলোচনাগুলো কেবল ইউক্রেনের ভবিষ্যৎকেই নয়, বরং বৃহত্তর ইউরোপীয় ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিকেও প্রভাবিত করবে।