ইউক্রেনের ওডেসা অঞ্চলে রাশিয়ার ধারাবাহিক হামলায় দেশটির জ্বালানি পরিকাঠামো, বিশেষ করে আজারবাইজানের গ্যাস সরবরাহ ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গত ৬ আগস্ট এবং ৮ আগস্ট, ২০২৫ তারিখে এই হামলাগুলো চালানো হয়। ওডেসা অঞ্চলের 'ওরলভকা' গ্যাস কম্প্রেশন স্টেশন, যা ট্রান্স-বলকান গ্যাস পাইপলাইনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, সেটিও হামলার শিকার হয়েছে। এই ঘটনায় সরঞ্জামের ক্ষতি হয়েছে, গ্যাস সরবরাহে সাময়িক বিঘ্ন ঘটেছে এবং চারজন আজারবাইজানি কর্মী গুরুতর আহত হয়েছেন।
আজারবাইজানের রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানি সোকর (SOCAR)-এর একটি তেল ডিপোতেও ৮ আগস্ট, ২০২৫ তারিখে হামলা চালানো হয়। এতে আগুন লেগে যায় এবং একটি ডিজেল পাইপলাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই ঘটনায় চারজন সোকর কর্মী গুরুতর আহত হন। আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ এই হামলাগুলোকে 'লক্ষ্যযুক্ত' বলে অভিহিত করেছেন এবং বলেছেন যে এগুলো আজারবাইজান ও ইউক্রেনের মধ্যে জ্বালানি সহযোগিতা ব্যাহত করতে পারবে না। ইউক্রেনের জ্বালানি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে এই হামলাগুলো বেসামরিক পরিকাঠামো এবং আজারবাইজান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের সাথে ইউক্রেনের সম্পর্ককে লক্ষ্য করে চালানো হয়েছে। এই হামলাগুলো ইউক্রেনের জ্বালানি নিরাপত্তা এবং আজারবাইজান ও ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে জ্বালানি সহযোগিতার উপর প্রভাব ফেলতে পারে। ট্রান্স-বলকান গ্যাস পাইপলাইনটি আজারবাইজানি গ্যাস ইউক্রেন এবং ইউরোপে পরিবহনের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। ইউক্রেন এই হামলাগুলোকে তাদের জ্বালানি স্বাধীনতা এবং ইউরোপের জ্বালানি নিরাপত্তা বিঘ্নিত করার প্রচেষ্টা হিসেবে দেখছে। নির্ভরযোগ্য সূত্রমতে, রাশিয়া যদি আজারবাইজানের স্বার্থের বিরুদ্ধে তার আগ্রাসী নীতি অব্যাহত রাখে, তবে বাকু ইউক্রেনে অস্ত্র সরবরাহের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার সম্ভাবনা খতিয়ে দেখবে। এই হামলাগুলো রাশিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যকার সম্পর্ককে আরও খারাপের দিকে নিয়ে যেতে পারে। ইউক্রেন ও আজারবাইজান উভয় দেশের প্রেসিডেন্টই এই হামলাগুলোর নিন্দা জানিয়েছেন এবং বলেছেন যে এই ঘটনাগুলো তাদের মধ্যকার জ্বালানি সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে বাধা দেবে না। ইউক্রেন তার জ্বালানি নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য আজারবাইজানকে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে দেখছে। এই হামলা সত্ত্বেও, উভয় দেশ জ্বালানি খাতে তাদের যৌথ কাজ চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী।