ইউক্রেনে বিদেশী সৈন্য মোতায়েন: পুতিন কর্তৃক বৈধ লক্ষ্য ঘোষণার প্রেক্ষিতে নিরাপত্তা নিশ্চয়তা আলোচনা

সম্পাদনা করেছেন: Татьяна Гуринович

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন যে ইউক্রেনে যেকোনো বিদেশী সৈন্য মোতায়েনকে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর জন্য বৈধ লক্ষ্যবস্তু হিসেবে গণ্য করা হবে। তিনি আরও যোগ করেন যে, যদি দীর্ঘমেয়াদী শান্তি চুক্তি সম্পাদিত হয়, তবে ইউক্রেনে বিদেশী সৈন্য উপস্থিতির কোনো যৌক্তিকতা থাকবে না। এই মন্তব্যটি পূর্ব ইউরোপীয় ফোরামে (Eastern Economic Forum) অনুষ্ঠিত একটি প্যানেল আলোচনায় তিনি করেন, যা ভ্লাদিভোস্টকে (Vladivostok) অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

এই ঘোষণাটি এসেছে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ (Emmanuel Macron) কর্তৃক ইউক্রেনের মিত্র দেশগুলোর পক্ষ থেকে যুদ্ধ-পরবর্তী নিরাপত্তা নিশ্চয়তা প্রদানের জন্য সৈন্য মোতায়েনের পরিকল্পনার ঘোষণার একদিন পর। ম্যাক্রোঁ জানিয়েছেন যে ২৬টি দেশ ইউক্রেনকে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য সৈন্য মোতায়েনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, যা স্থল, সমুদ্র এবং আকাশপথে হতে পারে। এই পদক্ষেপের উদ্দেশ্য হলো যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর ইউক্রেনকে আরও আগ্রাসন থেকে রক্ষা করা এবং শান্তি বজায় রাখা।

তবে, পুতিন এই প্রস্তাবের ব্যাপারে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। তিনি মনে করেন যে, যদি কোনো শান্তি চুক্তি সম্পাদিত হয়, তবে বিদেশী সৈন্য মোতায়েনের আর কোনো প্রয়োজন থাকবে না। তিনি জোর দিয়ে বলেন যে, রাশিয়া যেকোনো চুক্তি মেনে চলবে। অন্যদিকে, ক্রেমলিন মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ (Dmitry Peskov) বলেছেন যে, এই ধরনের চুক্তির জন্য মস্কোর আইনিভাবে বাধ্যতামূলক নথি প্রয়োজন হবে।

ঐতিহাসিকভাবে, বিদেশী সামরিক উপস্থিতি প্রায়শই ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনার কারণ হয়ে থাকে। অতীতে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ তাদের কৌশলগত স্বার্থরক্ষার জন্য বিশ্বজুড়ে সামরিক ঘাঁটি স্থাপন করেছে এবং বিভিন্ন দেশে হস্তক্ষেপ করেছে। এই ধরনের পদক্ষেপগুলো প্রায়শই স্থানীয় স্থিতিশীলতা এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের উপর গভীর প্রভাব ফেলে। ইউক্রেনের ক্ষেত্রে, বিদেশী সৈন্য মোতায়েনের ধারণাটি রাশিয়ার জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে দেখা হচ্ছে, যা এই সংঘাতের মূল কারণগুলোর মধ্যে একটি বলে রাশিয়া দাবি করে আসছে।

এই পরিস্থিতি ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। যদিও মিত্র দেশগুলো ইউক্রেনকে সুরক্ষা দিতে চাইছে, রাশিয়ার এই কঠোর বার্তা কূটনৈতিক প্রচেষ্টা এবং শান্তি আলোচনার ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে। এটি স্পষ্ট যে, ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পথটি এখনো অনেক জটিল এবং বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে গভীর মতপার্থক্য বিদ্যমান।

উৎসসমূহ

  • Deutsche Welle

  • Reuters

  • AP News

  • AP News

আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?

আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।