মঙ্গলবার, আগস্ট ২৬, ২০২৫ তারিখে, ইউক্রেন সরকার ১৮ থেকে ২২ বছর বয়সী পুরুষদের জন্য সীমান্ত অতিক্রমের নিয়মে একটি উল্লেখযোগ্য শিথিলতা ঘোষণা করেছে। এই পরিবর্তনটি দেশটিতে বিদ্যমান সামরিক আইনের অধীনেও কার্যকর হবে।
প্রধানমন্ত্রী ইউলিয়া স্ভিরিডেনঙ্কো জানিয়েছেন যে এই পদক্ষেপের উদ্দেশ্য হলো ইউক্রেনীয় প্রবাসীদের সাথে দেশের সম্পর্ক জোরদার করা এবং অনিয়মিত সীমান্ত অতিক্রমের প্রবণতা মোকাবেলা করা। পূর্বে, ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সী পুরুষদের জন্য ইউক্রেন ত্যাগ করা সাধারণত নিষিদ্ধ ছিল, তবে কিছু নির্দিষ্ট ব্যতিক্রম ছিল। নতুন নিয়মের আওতায়, ১৮ থেকে ২২ বছর বয়সী সকল ইউক্রেনীয় পুরুষ, এমনকি যারা বর্তমানে দেশের বাইরে রয়েছেন, তারাও অবাধে সীমান্ত অতিক্রম করতে পারবেন।
স্ভিরিডেনঙ্কো জোর দিয়ে বলেছেন যে এই সিদ্ধান্তটি তরুণ ইউক্রেনীয়দের তাদের মাতৃভূমির সাথে সংযোগ বজায় রাখতে এবং বিদেশে তাদের শিক্ষাগত লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করবে। তবে, এটি মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে ২৫ বছর বা তার বেশি বয়সী পুরুষদের জন্য সামরিক আইন এবং বাধ্যতামূলক সামরিক নিয়োগ অব্যাহত থাকবে। রাষ্ট্রপতি ভলোদিমির জেলেনস্কি ১৮ বছর বয়সে বাধ্যতামূলক সামরিক নিয়োগের বয়সসীমা কমানোর আন্তর্জাতিক অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছেন, যা অপর্যাপ্ত সামরিক সরঞ্জাম এবং অভ্যন্তরীণ বিরোধিতার কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
ইউরোপীয় সীমান্ত ও উপকূল রক্ষী সংস্থা (Frontex) এর তথ্য অনুযায়ী, অনিয়মিত সীমান্ত অতিক্রমের ঘটনাগুলো প্রায়শই সামরিক নিয়োগ এড়ানোর জন্য ঘটে থাকে। এই নতুন নীতিটি সম্ভবত এই ধরনের অবৈধ কার্যকলাপ কমাতে সহায়ক হবে, কারণ এটি তরুণদের জন্য একটি বৈধ ভ্রমণ পথ খুলে দিচ্ছে। Frontex-এর একটি প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২২ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সীমান্তে অনিয়মিত প্রবেশ প্রায় ৩৩০,০০০ রেকর্ড করা হয়েছিল, যা ২০১৬ সালের পর সর্বোচ্চ। যদিও ইউক্রেনীয় শরণার্থীদের ইউরোপীয় ইউনিয়নে প্রবেশের সংখ্যা অনেক বেশি, তারা এই পরিসংখ্যানের অন্তর্ভুক্ত নয়।
এই নীতি পরিবর্তনটি ইউক্রেনের বর্তমান প্রেক্ষাপটে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এটি একদিকে যেমন তরুণ প্রজন্মের সাথে দেশের সম্পর্ক সুদৃঢ় করার প্রয়াস, তেমনই অন্যদিকে অনিয়মিত সীমান্ত অতিক্রমের মতো সংবেদনশীল বিষয়গুলোকেও বিবেচনায় নিয়েছে। এই পদক্ষেপের ফলে ইউক্রেনীয় যুবকদের বিদেশে শিক্ষা বা অন্যান্য সুযোগ অন্বেষণ করার ক্ষেত্রে নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে, যা দীর্ঘমেয়াদে দেশের জন্য ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। তবে, দেশের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বজায় রাখার জন্য সামরিক নিয়োগের প্রয়োজনীয়তাও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ, যা ২৫ বছর বা তার বেশি বয়সী পুরুষদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য থাকবে।