আগস্ট ২০২৫-এ, ভেনেজুয়েলার সরকার আন্তর্জাতিক চাপ এবং একটি বিতর্কিত নির্বাচনের পর রাজনৈতিক বন্দীদের একটি দলকে মুক্তি দিয়েছে। এই মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন প্রাক্তন ডেপুটি আমেরিকো দে গ্রাসিয়া এবং বিরোধী নেতা পেদ্রো গুয়ানিপা। এই ঘটনাটি একটি জটিল রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে ঘটেছে, যেখানে মানবাধিকার সংস্থাগুলো অব্যাহত দমন-পীড়ন এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
বিভিন্ন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, মুক্তিপ্রাপ্ত বন্দীর সংখ্যা নিয়ে ভিন্নতা রয়েছে, যেখানে ২২৫ জন এবং ১০৭ জনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ফরেনসিক প্যানেল (Foro Penal) নামক মানবাধিকার সংস্থা জানিয়েছে যে, জুলাই ২০২৪-এর নির্বাচনের পর থেকে ২০০০ জনেরও বেশি মানুষকে নির্বিচারে আটক করা হয়েছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (Human Rights Watch) সহ অন্যান্য সংস্থাগুলো ভেনেজুয়েলার সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করছে যাতে তারা সকল রাজনৈতিক বন্দীদের অবিলম্বে মুক্তি দেয় এবং মানবাধিকার ও আইনের শাসনকে সম্মান করে।
বিরোধী নেতা হেনরিক ক্যাপ্রিলস মন্তব্য করেছেন যে, ভেনেজুয়েলায় নির্বাচন বর্জন করা কেবল মাদুরোর জন্য কাজ সহজ করে দেয়। এই মুক্তিপ্রাপ্তির ঘটনাটি ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও মানবিক চ্যালেঞ্জের প্রেক্ষাপটে একটি গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন। এটি আন্তর্জাতিক নজরদারির মধ্যে ঘটছে এবং গণতান্ত্রিক সংস্কার ও মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধার আহ্বান জানানো হচ্ছে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ-এর একটি প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৪ সালের প্রথমার্ধে মানবাধিকার কর্মীদের বিরুদ্ধে ৫৯২টিরও বেশি হামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে, যা পূর্ববর্তী বছরের একই সময়ের তুলনায় ৯২% বৃদ্ধি পেয়েছে। নির্বাচনের পর, কর্তৃপক্ষ মানবাধিকার কর্মী, সমালোচক, রাজনৈতিক নেতা এবং স্বাধীন সাংবাদিকদের পাসপোর্ট বাতিল করে দিয়েছে, যা তাদের দেশ ত্যাগ করতে বাধা দিচ্ছে।
এই মুক্তিপ্রাপ্তি একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে, তবে মানবাধিকার সংস্থাগুলো অব্যাহত নির্যাতনের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, যা ইঙ্গিত দেয় যে পরিস্থিতি এখনও গুরুতর এবং সরকারের দমন-পীড়নের কৌশলে মৌলিক পরিবর্তন আসেনি। হেনরিক ক্যাপ্রিলসের মন্তব্য ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক বিভেদ এবং বিরোধী দলের মুখোমুখি হওয়া চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরেছে। ভেনেজুয়েলার পরিস্থিতি একটি গভীর মানবিক সংকটের মধ্যে রয়েছে, যেখানে লক্ষ লক্ষ মানুষ খাদ্য ও ওষুধের মতো মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত।
ফরেনসিক প্যানেলের তথ্য অনুযায়ী, এখনও ৮০০ জনেরও বেশি রাজনৈতিক বন্দী কারাগারে রয়েছেন, যা দেশটির মানবাধিকার পরিস্থিতির উদ্বেগজনক চিত্র তুলে ধরে। এই মুক্তিপ্রাপ্তি একটি বৃহত্তর পরিবর্তনের দিকে একটি পদক্ষেপ হতে পারে, তবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলো পরিস্থিতির উপর নিবিড়ভাবে নজর রাখছে।