শনিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ তারিখে, বার্লিনে প্রায় ১ লক্ষেরও বেশি মানুষ জার্মানির ইসরায়েলের গাজা নীতির প্রতি সমর্থনের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে আসেন। "অল আইজ অন গাজা – স্টপ দ্য জেনোসাইড" শীর্ষক এই বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীরা "ফ্রি, ফ্রি প্যালেস্টাইন" এবং "ভিভা প্যালেস্টাইন" স্লোগান দেন। তাদের হাতে "গাজায় গণহত্যা বন্ধ করুন", "সকলের জন্য আর কখনও নয়" এবং "ফিলিস্তিনের মুক্তি" লেখা প্ল্যাকার্ড ছিল এবং অনেকেই ফিলিস্তিনি পতাকা বহন করেন।
প্রায় ৫০টি গোষ্ঠী, যার মধ্যে ফিলিস্তিনপন্থী সংগঠন, মে কো ইন্টারন্যাশনাল, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এবং বিরোধী দল লেফট পার্টি অন্তর্ভুক্ত ছিল, এই বিক্ষোভের আয়োজন করে। আয়োজকদের দাবি ছিল অবিলম্বে জার্মান অস্ত্র রপ্তানি বন্ধ করা, গাজায় মানবিক সহায়তার অবাধ প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা এবং ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) কর্তৃক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা।
সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে, ৬২% জার্মান ভোটার মনে করেন ইসরায়েলের গাজা অভিযান গণহত্যা। এমনকি চ্যান্সেলর ফ্রেডরিখ মেরজের রক্ষণশীল সিডিইউ/সিএসইউ ব্লকের ৬০% ভোটার এবং জোট সঙ্গী সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এসপিডি)-র ৭১% ভোটারও ইসরায়েলের সামরিক অভিযানকে গণহত্যা হিসেবে দেখছেন। যদিও চ্যান্সেলর মেরজ এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োহান ওয়াডেফুল ইসরায়েলের আক্রমণ এবং মানবিক সহায়তা অবরোধের সমালোচনা করেছেন, তারা "গণহত্যা" শব্দটি ব্যবহার করা থেকে বিরত রয়েছেন এবং "অতিরিক্ত" শক্তি প্রয়োগের কথা বলেছেন।
এই বিক্ষোভটি জার্মানির সরকারি নীতির সাথে জনগণের মতামতের একটি বড় পার্থক্য তুলে ধরেছে। আন্তর্জাতিকভাবে, জার্মানি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার ক্ষেত্রে ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য এবং অন্যান্য ইউরোপীয় দেশগুলোর থেকে ভিন্ন অবস্থান নিয়েছে। যেখানে অনেক দেশ ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছে, জার্মানি এখনও তা করেনি। এই বিক্ষোভটি কেবল বার্লিনেই সীমাবদ্ধ ছিল না, ডুসেলডর্ফের মতো অন্যান্য জার্মান শহরেও একই ধরনের প্রতিবাদ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এই ঘটনাটি গাজা সংঘাত নিয়ে আন্তর্জাতিক আলোচনা এবং জার্মান সরকারের উপর ক্রমবর্ধমান জনমতের চাপকে নির্দেশ করে। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কারণ এটি আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এবং মানবাধিকারের প্রশ্নে সরকারের নীতি নির্ধারণে জনমত কতটা প্রভাব ফেলতে পারে তা দেখায়।