অস্ট্রেলিয়া কর্তৃক মার্কিন গরুর মাংস আমদানির উপর বিধিনিষেধ প্রত্যাহার: বাণিজ্য উত্তেজনার অবসান

সম্পাদনা করেছেন: S Света

জুলাই ২০২৫-এ, অস্ট্রেলিয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে একটি দীর্ঘস্থায়ী বাণিজ্য বিরোধের অবসান ঘটিয়েছে, মার্কিন গরুর মাংস আমদানির উপর তার জৈব নিরাপত্তা বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করে নিয়েছে। এই সিদ্ধান্তটি একটি পুঙ্খানুপুঙ্খ পর্যালোচনার পর নেওয়া হয়েছে, যা নিশ্চিত করেছে যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার গবাদি পশুর সন্ধানযোগ্যতার (traceability) ব্যবস্থা উন্নত করেছে এবং বোভাইন স্পঞ্জিফর্ম এনসেফালোপ্যাথি (BSE) বা ম্যাড কাউ ডিজিজের মতো জৈব নিরাপত্তা ঝুঁকি কার্যকরভাবে পরিচালনা করছে। এই বিধিনিষেধগুলি ২০০৩ সাল থেকে কার্যকর ছিল এবং এটি একটি উল্লেখযোগ্য বিতর্কের কারণ হয়েছিল, বিশেষ করে যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ২০২৫ সালের এপ্রিলে অস্ট্রেলিয়ার পণ্যের উপর ১০% শুল্ক আরোপ করে, যার মধ্যে গরুর মাংসও অন্তর্ভুক্ত ছিল। তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অস্ট্রেলিয়ার মার্কিন গরুর মাংস আমদানির বিষয়ে তাদের অবস্থান নিয়ে প্রকাশ্যে সমালোচনা করেছিলেন, এটিকে "বন্ধুর কাজ নয়" বলে অভিহিত করেছিলেন।

মার্কিন শুল্ক আরোপ সত্ত্বেও, অস্ট্রেলিয়ার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গরুর মাংস রপ্তানি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২৫ সালের জুলাই মাসে, এই রপ্তানি আগের বছরের তুলনায় ১২% বৃদ্ধি পেয়ে ৪৩,০০০ মেট্রিক টনে পৌঁছেছে। এই বৃদ্ধির কারণ ছিল দীর্ঘস্থায়ী খরা এবং উচ্চ মাংসের দামের কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অভ্যন্তরীণ সরবরাহের সীমাবদ্ধতা। অস্ট্রেলিয়ার পশুসম্পদ শিল্পের নেতারা আত্মবিশ্বাস প্রকাশ করেছেন যে আমদানি বিধিনিষেধ প্রত্যাহার অস্ট্রেলিয়ার অভ্যন্তরীণ বাজারে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলবে না। তারা জোর দিয়ে বলেছেন যে অস্ট্রেলিয়ার গরুর মাংস উৎপাদন ক্ষমতা জাতীয় চাহিদা মেটাতে পর্যাপ্ত, এবং প্রধান মনোযোগ কঠোর জৈব নিরাপত্তা মান বজায় রাখার উপর থাকবে। যদিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই উন্নয়নকে একটি ইতিবাচক ফলাফল হিসেবে দেখেছে, কিছু অস্ট্রেলিয়ান উৎপাদক সতর্কতামূলক অবস্থান বজায় রেখেছেন, তাদের গবাদি পশুর রোগমুক্ত অবস্থা সংরক্ষণের গুরুত্বের উপর জোর দিয়েছেন। অস্ট্রেলিয়া সরকার দেশটির গুরুত্বপূর্ণ পশুসম্পদ শিল্পকে রক্ষা করার জন্য চলমান জৈব নিরাপত্তা ব্যবস্থাগুলি নিশ্চিত করতে পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এই সমাধানটি মার্কিন-অস্ট্রেলিয়া বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি বড় পরিবর্তন এনেছে এবং বিশ্বব্যাপী গরুর মাংসের বাজারের উপর এর প্রভাব পড়তে পারে। নীতি পরিবর্তনের এই প্রভাবের সম্পূর্ণ মাত্রা আগামী মাসগুলিতে স্পষ্ট হবে, কারণ উভয় দেশ নতুন বাণিজ্য গতিশীলতার সাথে খাপ খাইয়ে নিচ্ছে। অস্ট্রেলিয়ার এই পদক্ষেপটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি বড় বাণিজ্য বিজয় হিসেবে দেখা হচ্ছে, যা দুই দেশের মধ্যেকার বাণিজ্য সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করবে। এই সিদ্ধান্তটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি রপ্তানি সম্প্রসারণের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবেও বিবেচিত হচ্ছে। অস্ট্রেলিয়ার পশুসম্পদ শিল্পে জৈব নিরাপত্তা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, এবং এই নতুন নীতিগুলি এই শিল্পের ধারাবাহিকতা এবং সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই পরিবর্তনগুলি বিশ্বব্যাপী খাদ্য সরবরাহ শৃঙ্খলেও প্রভাব ফেলতে পারে, কারণ এটি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নীতি এবং জৈব নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যেকার জটিল সম্পর্ককে তুলে ধরে।

উৎসসমূহ

  • Bloomberg Business

  • Australia lifts biosecurity import restrictions on US beef

  • US appetite for Australian beef poised to grow on tariff advantage

  • Australia says US tariffs 'not act of a friend' but rules out reciprocal move

আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?

আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।