নাসা (NASA) এবং ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ISRO)-র যৌথ উদ্যোগে তৈরি NISAR (NASA-ISRO Synthetic Aperture Radar) স্যাটেলাইটটি ৩০শে জুলাই, ২০২৫ তারিখে মহাকাশে উৎক্ষেপিত হওয়ার পর সফলভাবে পৃথিবীর পর্যবেক্ষণে কাজ শুরু করেছে। এই অত্যাধুনিক স্যাটেলাইটটি পৃথিবীর পৃষ্ঠের পরিবর্তনগুলি অভূতপূর্ব বিস্তারিতভাবে পরিমাপ করতে সক্ষম। NISAR স্যাটেলাইটে L-ব্যান্ড এবং S-ব্যান্ড সিন্থেটিক অ্যাপারচার রাডার (SAR) প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে, যা মেঘ এবং বনভূমির আচ্ছাদন ভেদ করে পৃথিবীর প্রায় সমস্ত স্থলভাগ এবং বরফের পৃষ্ঠকে প্রতি ১২ দিনে পর্যবেক্ষণ করতে পারে। এই ঘন ঘন পর্যবেক্ষণ প্রাকৃতিক দুর্যোগ, কৃষির অগ্রগতি এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবগুলি ট্র্যাক করার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আগস্ট ২০২৫-এ, NISAR তার প্রথম রাডার চিত্র প্রকাশ করেছে, যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মেইন রাজ্যের মাউন্ট ডেজার্ট আইল্যান্ড এবং উত্তর ডাকোটার কৃষিক্ষেত্রের বিস্তারিত চিত্র দেখা গেছে। এই প্রাথমিক চিত্রগুলি জলের উৎস, বনভূমি, কৃষিজমি এবং মানবসৃষ্ট কাঠামোর মধ্যে পার্থক্য করার স্যাটেলাইটটির দক্ষতা প্রমাণ করেছে। NISAR-এর অনন্য দ্বৈত-ব্যান্ড রাডার ব্যবস্থা এটিকে উচ্চ-রেজোলিউশনের পৃথিবীর পর্যবেক্ষণে পরিপূরক ক্ষমতা প্রদান করে।
NASA-র L-ব্যান্ড সিস্টেম ঘন বনভূমি ভেদ করতে, মাটির আর্দ্রতা পরিমাপ করতে এবং বরফের স্থানান্তর, ভূমিধস এবং টেকটোনিক কার্যকলাপের মতো সূক্ষ্ম ভূমি আন্দোলন সনাক্ত করতে পারে। অন্যদিকে, ISRO-র S-ব্যান্ড রাডার ফসল এবং তৃণভূমির মতো ছোট উদ্ভিদের পরিবর্তনে অত্যন্ত সংবেদনশীল। এই মিশনের সাফল্য আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্বের কার্যকারিতা তুলে ধরেছে, যা পৃথিবীর পর্যবেক্ষণ প্রযুক্তির অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
NISAR থেকে প্রাপ্ত ডেটা বিশ্বজুড়ে বিজ্ঞানী, নীতি নির্ধারক এবং সম্প্রদায়গুলির জন্য অমূল্য প্রমাণিত হবে, যা পৃথিবীর গতিশীল ব্যবস্থা সম্পর্কে আমাদের বোঝাপড়াকে আরও গভীর করবে। এই স্যাটেলাইটের ডেটা প্রাকৃতিক সম্পদ এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সাহায্য করবে, পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবগুলি সম্পর্কে বিজ্ঞানীদের আরও ভালোভাবে বুঝতে সহায়তা করবে। সম্পূর্ণ বিজ্ঞানভিত্তিক কার্যক্রম ২০২৫ সালের নভেম্বরে শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা বিশ্বব্যাপী দুর্যোগ প্রতিক্রিয়া, কৃষি এবং জলবায়ু পর্যবেক্ষণে বিপ্লব আনবে।