নভেম্বর ২০২৫-এ উৎক্ষেপণের জন্য ইউরোপের কোপার্নিকাস সেন্টিনেল-৬বি স্যাটেলাইট চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই অত্যাধুনিক মহাকাশযানটি বর্তমানে ক্যালিফোর্নিয়ার ভ্যান্ডেনবার্গ উৎক্ষেপণ স্থলে ব্যাপক পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। স্পেসএক্স-এর ফ্যালকন ৯ রকেটের মাধ্যমে এটি কক্ষপথে স্থাপন করা হবে।
সেন্টিনেল-৬বি তার পূর্বসূরি সেন্টিনেল-৬এ-এর কাজকে এগিয়ে নিয়ে যাবে, যা ২০২০ সালের নভেম্বরে উৎক্ষেপিত হয়েছিল। আশা করা হচ্ছে, সেন্টিনেল-৬বি প্রায় ছয় বছর ধরে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতার অতি-সুনির্দিষ্ট তথ্য সরবরাহ করবে। এই তথ্য সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব বোঝার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি নগর পরিকল্পনা এবং দুর্যোগ প্রস্তুতির মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রেও সহায়ক হবে।
এই মিশনটি ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা (ESA), নাসা, ইউমেটস্যাট, NOAA এবং CNES-এর সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফল। সেন্টিনেল-৬বি বিশ্বব্যাপী সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা, সমুদ্রের অবস্থা, বাতাসের গতি, স্রোতের গতিপ্রকৃতি এবং তাপ সঞ্চয়ের উপর গুরুত্বপূর্ণ অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করবে। এই তথ্য উপকূলীয় ঝুঁকিপূর্ণ সম্প্রদায়গুলির জন্য অত্যাবশ্যকীয় সুরক্ষা ব্যবস্থা বিকাশে সরকার এবং প্রতিষ্ঠানগুলিকে সক্ষম করবে।
সেন্টিনেল-৬ মিশনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো এটি সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা পরিমাপের ধারাবাহিকতা বজায় রাখবে, যা ১৯৯২ সালে TOPEX/Poseidon মিশনের মাধ্যমে শুরু হয়েছিল এবং পরবর্তীকালে Jason সিরিজের স্যাটেলাইটগুলির মাধ্যমে অব্যাহত ছিল। সেন্টিনেল-৬বি, সেন্টিনেল-৬এ-এর সাথে মিলে, অন্তত ২০৩০ সাল পর্যন্ত এই গুরুত্বপূর্ণ ডেটা রেকর্ডকে প্রসারিত করবে। এই ডেটা সমুদ্রের স্রোত, জলবায়ু পরিবর্তন এবং এল নিনো ও লা নিনার মতো জলবায়ু সংক্রান্ত ঘটনাগুলির পূর্বাভাস উন্নত করতে সাহায্য করে। সেন্টিনেল-৬বি-এর তথ্য শুধুমাত্র সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির পর্যবেক্ষণে সীমাবদ্ধ থাকবে না। এই আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা আমাদের গ্রহকে আরও ভালোভাবে বুঝতে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।