নাসা-র আর্টেমিস II মিশনের নভোচারীরা চাঁদে মানব প্রেরণের লক্ষ্যে তাদের প্রস্তুতি জোরদার করছেন। সম্প্রতি, ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টারে নভোচারীরা একটি গুরুত্বপূর্ণ রাতের লঞ্চ মহড়া সম্পন্ন করেছেন। এই মহড়াটি ছিল আর্টেমিস II মিশনের একটি অংশ, যা অরিয়ন মহাকাশযান এবং স্পেস লঞ্চ সিস্টেম (SLS) রকেটের প্রথম মনুষ্যবাহী উড়ান।
আর্টেমিস II মিশনের ক্রু চারজন নভোচারী নিয়ে গঠিত: নাসা নভোচারী রেইড ওয়াইসম্যান (কমান্ডার), ভিক্টর গ্লোভার (পাইলট), ক্রিস্টিনা কোচ (মিশন স্পেশালিস্ট) এবং কানাডিয়ান স্পেস এজেন্সি (CSA) নভোচারী জেরেম হ্যানসেন (মিশন স্পেশালিস্ট)। তাদের ১০ দিনের এই যাত্রা চাঁদের চারপাশে প্রদক্ষিণ করবে এবং ভবিষ্যতের মহাকাশ অনুসন্ধানের জন্য অত্যাবশ্যকীয় সিস্টেমগুলির পরীক্ষা করবে। এই মিশনের মাধ্যমে ভিক্টর গ্লোভার প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তি, ক্রিস্টিনা কোচ প্রথম মহিলা এবং জেরেম হ্যানসেন প্রথম অ-আমেরিকান হিসেবে চাঁদে ভ্রমণ করবেন।
মহড়ার সময়, নভোচারীরা লঞ্চ টাওয়ারে তাদের স্পেসস্যুট পরে জরুরি অবস্থায় বের হওয়ার পদ্ধতি অনুশীলন করেন। তারা বিভিন্ন লঞ্চ-ডে পরিস্থিতি, যেমন একটি লঞ্চ স্ক্রাব (বাতিল) সিকোয়েন্স সিমুলেট করেন। দলটি লঞ্চ কমপ্লেক্স ৩৯বি-এর মোবাইল লঞ্চ প্ল্যাটফর্ম থেকে পেরিমিটার পর্যন্ত কেবল ট্রলি বাস্কেট ব্যবহার করে জরুরি অবস্থায় বের হওয়ার পদ্ধতিও মহড়া দেয়। এই মহড়াগুলি নিশ্চিত করে যে নভোচারী এবং গ্রাউন্ড টিম উভয়ই লঞ্চের দিনের জন্য প্রস্তুত এবং তাদের কার্যক্রম সম্পর্কে অবগত।
আর্টেমিস II মিশনটি অরিয়ন মহাকাশযানের হিট শিল্ডের মতো প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জের কারণে বেশ কয়েকবার বিলম্বিত হয়েছে। এই সমস্যাগুলির কারণে মিশনের তারিখ ২০২৪ থেকে বর্তমানে এপ্রিল ২০২৬-এ পুনঃনির্ধারিত হয়েছে। এই বিলম্ব সত্ত্বেও, নাসা চাঁদে একটি টেকসই মানব উপস্থিতি স্থাপনের লক্ষ্যে তাদের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এই মিশনটি চাঁদে একটি স্থায়ী মানব বসতি স্থাপনের নাসার লক্ষ্যের দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ এবং এটি মঙ্গল গ্রহে ভবিষ্যতের মিশনের জন্যও প্রস্তুতি হিসেবে কাজ করবে। নভোচারীদের কঠোর প্রশিক্ষণ এবং মিশনের অগ্রগতি মানব মহাকাশ অনুসন্ধানে নাসার প্রতিশ্রুতি তুলে ধরে। কানাডিয়ান নভোচারী জেরেম হ্যানসেনের অংশগ্রহণ আন্তর্জাতিক সহযোগিতার গুরুত্বও তুলে ধরে, যা মহাকাশ অনুসন্ধানের ভবিষ্যৎকে আরও শক্তিশালী করবে।