ব্যাঙ্ক রাক্রিয়াত ইন্দোনেশিয়া (Bank Rakyat Indonesia) তাদের 'BRInita' কর্মসূচির অধীনে শহরাঞ্চলে নগর কৃষি বা আরবান ফার্মিং-এর প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এই উদ্যোগের প্রধান উদ্দেশ্য হলো অব্যবহৃত শহুরে স্থানগুলিকে কাজে লাগিয়ে স্থানীয় খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থা উন্নত করা এবং পরিবেশগত স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সহায়তা করা। দ্রুত নগরায়ণের ফলে সৃষ্ট খাদ্য ও পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য এটি একটি আধুনিক ও সুচিন্তিত কৌশল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
এই কর্মসূচির সাফল্য উদযাপন করতে সম্প্রতি পশ্চিম জাভার বান্দুং-এ একটি ফসল তোলার অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়, যেখানে অংশগ্রহণকারীদের উন্নত মানের ফল চাষের পদ্ধতি সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এই উদ্যোগটি শুরু হওয়ার পর থেকে ৩১টি স্থানে প্রসার লাভ করেছে এবং এক হাজারেরও বেশি নাগরিক এর সুবিধা ভোগ করেছেন। স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত তাজা খাদ্যদ্রব্য সহজলভ্য হওয়ায় এটি খাদ্য নিরাপত্তা জোরদার করেছে এবং কৃষিজাত পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির চাপ থেকে শহরবাসীকে কিছুটা স্বস্তি দিয়েছে।
BRInita কর্মসূচির আওতায় উৎপাদিত ফসলের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য, যা স্থানীয় পর্যায়ে অপুষ্টিজনিত সমস্যা, বিশেষত শিশুদের খর্বতার হার কমাতে সহায়ক হয়েছে। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, এই কর্মসূচির প্রভাবে খর্বতার হার প্রায় ১১.২৭% হ্রাস পেয়েছে। পরিবেশগত দিক থেকেও এই উদ্যোগ ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে; উৎপাদিত বর্জ্য থেকে প্রায় ৩,৯৮২ কেজি তরল জৈব সার এবং ২,২২৮ লিটার ইকো এনজাইম তৈরি হয়েছে, যা পরিবেশবান্ধব কৃষি অনুশীলনের পথ দেখাচ্ছে। নগর কৃষির মাধ্যমে নাইট্রোজেন দূষণ হ্রাস এবং মাটির স্বাস্থ্য উন্নয়নের মতো পরিবেশগত সুবিধাও পরিলক্ষিত হচ্ছে।
এই কর্মসূচি কেবল খাদ্য উৎপাদনকেই উৎসাহিত করে না, বরং সামাজিক সংহতি এবং পরিবেশগত দায়িত্ববোধকেও দৃঢ় করে। বান্দুং-এর ফসল তোলার অনুষ্ঠানে স্থানীয় যুব সংগঠন 'কারাং তরুনা' এবং 'পিকেকে' (পেনগেমবামগান দান কেসেজাহতেরান কেলুয়ারা)-এর সদস্যরা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। অংশগ্রহণকারীরা ফসল তোলার পাশাপাশি নিজেদের উৎপাদিত পণ্য পারিবারিক ভোগের জন্য ব্যবহার করতে পারছেন, অতিরিক্ত আয়ের জন্য বিক্রি করতে পারছেন, অথবা সামাজিক কর্মসূচিতে দান করতে পারছেন। এই সম্মিলিত প্রচেষ্টা শহরের বাসিন্দাদের মধ্যে একাত্মতার অনুভূতি জাগিয়ে তুলেছে।
ব্রাই পেডুলি (BRI Peduli)-এর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত এই কার্যক্রম প্রমাণ করে যে, সীমিত স্থানকে উৎপাদনশীল সম্পদে রূপান্তরিত করার মাধ্যমে একটি উন্নত ও স্থিতিশীল ভবিষ্যৎ নির্মাণ সম্ভব। নগর কৃষি শহুরে পরিবেশে সবুজ স্থান বৃদ্ধি করে, যা শহরের তাপ দ্বীপের প্রভাব কমাতে সাহায্য করে এবং সামগ্রিক পরিবেশের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে। এই উদ্যোগ ইন্দোনেশিয়ার টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (SDGs) অর্জনেও সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।