আমাদের খাদ্যাভ্যাস আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর গভীর প্রভাব ফেলে। কিছু নির্দিষ্ট খাবার মেজাজ এবং জ্ঞানীয় কার্যকারিতা উন্নত করতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে যে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ তৈলাক্ত মাছ, ডার্ক চকোলেট এবং প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবার বিষণ্ণতা এবং উদ্বেগের লক্ষণগুলি কমাতে সহায়ক হতে পারে। এই খাবারগুলিতে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, ফ্ল্যাভোনয়েড, ম্যাগনেসিয়াম এবং প্রোবায়োটিকসের মতো উপাদান রয়েছে যা মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য এবং মেজাজ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিশেষ করে, ইকোসাপেন্টাইনয়িক অ্যাসিড (EPA) বিষণ্ণতা কমাতে বিশেষভাবে কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে। ডার্ক চকোলেটের ফ্ল্যাভোনয়েডগুলি কর্টিসল (স্ট্রেস হরমোন) কমাতে সাহায্য করে এবং মেজাজ উন্নত করে।
অন্যান্য উপকারী খাবারের মধ্যে রয়েছে কলা, ওটস, বেরি, বাদাম, বীজ, সবুজ শাকসবজি এবং গোটা শস্য। এই খাবারগুলি ভিটামিন, খনিজ এবং জটিল কার্বোহাইড্রেট সরবরাহ করে যা সেরোটোনিন উৎপাদনে সহায়তা করে এবং স্থিতিশীল শক্তির মাত্রা বজায় রাখে। সেরোটোনিন একটি নিউরোট্রান্সমিটার যা মেজাজ এবং সুস্থতার অনুভূতি বাড়াতে পরিচিত। ভিটামিন বি৬ সমৃদ্ধ কলা সেরোটোনিন এবং ডোপামিন তৈরিতে সাহায্য করে, যা মেজাজ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ। সবুজ শাকসবজি, যেমন পালং শাক, ম্যাগনেসিয়াম এবং ফোলেটের চমৎকার উৎস, যা সেরোটোনিনের মাত্রা বাড়াতে এবং মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। ম্যাগনেসিয়াম স্নায়ুতন্ত্রকে শান্ত করতে এবং মেজাজ ও আবেগ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ম্যাগনেসিয়ামের ঘাটতি বিষণ্ণতা এবং উদ্বেগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। বাদাম, বীজ এবং সবুজ শাকসবজিতে ম্যাগনেসিয়াম পাওয়া যায়।
প্রোবায়োটিকস, যা দই, কেফির এবং কিমচির মতো গাঁজন করা খাবারে পাওয়া যায়, অন্ত্রের স্বাস্থ্য উন্নত করে এবং মস্তিষ্ক-অন্ত্রের অক্ষের মাধ্যমে মেজাজ নিয়ন্ত্রণে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। কিছু গবেষণা দেখায় যে প্রোবায়োটিক গ্রহণ উদ্বেগ এবং বিষণ্ণতার লক্ষণগুলি কমাতে পারে। সামগ্রিকভাবে, একটি সুষম খাদ্য গ্রহণ যা এই পুষ্টিকর খাবারগুলি অন্তর্ভুক্ত করে, তা মেজাজ উন্নত করতে এবং মানসিক সুস্থতা বাড়াতে একটি শক্তিশালী উপায়। এই খাবারগুলি কেবল শারীরিক স্বাস্থ্যই নয়, মানসিক স্বাস্থ্যেরও উন্নতি ঘটায়।