প্রযুক্তির অগ্রগতিতে রান্নাঘরের সরঞ্জামগুলি নতুন মাত্রা পাচ্ছে, যার সাম্প্রতিক উদাহরণ হলো শাওমি কর্তৃক ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশসমূহ এবং যুক্তরাজ্যে তাদের স্মার্ট মাল্টিফাংশনাল রাইস কুকার চালু করা। এই তিন লিটারের ধারণক্ষমতাসম্পন্ন যন্ত্রটি আধুনিক জীবনযাত্রার সাথে তাল মিলিয়ে রান্নার প্রক্রিয়াকে আরও সহজ ও সুসংগঠিত করার লক্ষ্যে বাজারে এসেছে। এই অত্যাধুনিক যন্ত্রটিতে শ্বেত চাল, বাদামী চাল, পায়েস এবং ভাপানোর মতো মোট আটটি ভিন্ন রান্নার পদ্ধতি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
এর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হলো শাওমি হোম অ্যাপের মাধ্যমে এটিকে দূর থেকে নিয়ন্ত্রণ করার সুবিধা। ব্যস্ত দৈনন্দিন রুটিনের মধ্যে ব্যবহারকারীরা এই অ্যাপ ব্যবহার করে রান্নার সময়কাল এবং চালের কাঙ্ক্ষিত ঘনত্ব বা টেক্সচার প্রয়োজন অনুযায়ী পরিবর্তন করতে পারেন, যা দৈনন্দিন জীবনে নতুন স্বাচ্ছন্দ্য এনে দেয়। ব্যবহারকারীর সুবিধার কথা মাথায় রেখে এর নকশায় বিশেষ মনোযোগ দেওয়া হয়েছে। পাত্রের ভেতরের অংশটি নন-স্টিক আবরণে তৈরি, যা খাবার লেগে যাওয়া প্রতিরোধ করে এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা রাখে অত্যন্ত সহজ। এছাড়াও, এর ভেতরের ঢাকনা এবং স্টিম ভালভ সহজে খোলা যায়, ফলে রক্ষণাবেক্ষণের কাজটিও ঝামেলামুক্ত হয়।
ইউরোপের বাজারে এই কুকারটি ৪৯.৯৯ ইউরো মূল্যে পাওয়া যাচ্ছে, যা এটিকে একটি সাশ্রয়ী মূল্যের স্মার্ট রান্নাঘরের গ্যাজেট হিসেবে প্রতিষ্ঠা করছে। এই স্মার্ট রাইস কুকারটি একবারে প্রায় দশ বাটি ভাত প্রস্তুত করতে সক্ষম, যা একক ব্যবহারকারী থেকে শুরু করে ছোট পরিবারের প্রয়োজন মেটাতে যথেষ্ট। এতে উচ্চ-ক্ষমতার হিটিং এলিমেন্ট ব্যবহার করা হয়েছে যা চালকে সমানভাবে রান্না করে এবং তাপমাত্রা সেন্সর থাকার কারণে ভাত পুড়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে না। ব্যবহারকারীরা চাইলে রান্নার সময় ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত পিছিয়ে দিতে পারেন, অর্থাৎ সকালে উপকরণ দিয়ে রাখলে সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে গরম ও প্রস্তুত খাবার পাওয়া সম্ভব।
স্মার্ট প্রযুক্তির এই সংযোজন কেবল সুবিধার জন্যই নয়, এটি আমাদের দৈনন্দিন অভ্যাসের প্রতি এক নতুন মনোযোগের আহ্বান জানায়। যখন কোনো যন্ত্র সময় ও শ্রম সাশ্রয় করে, তখন সেই অতিরিক্ত সময় নিজেদের বিকাশের কাজে লাগানো যায়। এই ধরনের ডিভাইসগুলো আমাদের খাদ্যাভ্যাসের উপর আরও বেশি নিয়ন্ত্রণ এনে দেয়, যা সামগ্রিক সুস্থতার পথে একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। কিছু উন্নত মডেলে আইএইচ (ইনডাকশন হিটিং) সিস্টেম ব্যবহার করা হয়, যা ৩৬০-ডিগ্রি অভিন্ন তাপ বিতরণ নিশ্চিত করে, যা খাদ্যের স্বাদ ও পুষ্টিগুণ ধরে রাখতে সাহায্য করে। এই যন্ত্রের আগমন যেন রান্নাঘরের কাজকে একটি সুশৃঙ্খল ও উন্নত অভিজ্ঞতায় রূপান্তরিত করার সুযোগ মাত্র।