পেরুতে স্থূলতার ক্রমবর্ধমান হার জনস্বাস্থ্যের জন্য এক গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, যেখানে প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে এই হার ২৪.১% পরিলক্ষিত হয়েছে। এই পরিস্থিতি ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপের মতো দীর্ঘস্থায়ী রোগগুলির ঝুঁকি বহুগুণে বাড়িয়ে দিচ্ছে। এই গুরুতর পরিস্থিতি মোকাবিলায়, স্বাস্থ্য পেশাদারদের জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে লিমাতে সপ্তম আন্তর্জাতিক পুষ্টি, শারীরিক কার্যকলাপ এবং স্বাস্থ্য বিষয়ক কোর্সের আয়োজন করা হয়েছে।
এই গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলনে বিশেষজ্ঞরা স্থূলতা ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে বহুমুখী দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আলোচনা করেছেন। আলোচ্যসূচিতে স্থান পেয়েছিল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (Artificial Intelligence) কীভাবে শারীরিক কার্যকলাপের পরিকল্পনা ও পর্যবেক্ষণে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে, এবং বায়োইলেক্ট্রিক্যাল ইম্পিডেন্স (bioelectrical impedance) এর মতো অত্যাধুনিক পরিমাপ পদ্ধতিতে নতুন ধারণাগুলির প্রয়োগ। বায়োইলেক্ট্রিক্যাল ইম্পিডেন্স অ্যানালাইসিস (BIA) হলো শরীরের গঠন, যেমন চর্বি ও চর্বিমুক্ত ভর, অনুমান করার একটি দ্রুত, অ-আক্রমণাত্মক এবং সাশ্রয়ী পদ্ধতি, যা স্বাস্থ্য ও রোগ নির্ণয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে স্বাস্থ্য পেশাদাররা রোগীর শারীরিক অবস্থার সূক্ষ্ম পরিবর্তনগুলিও পর্যবেক্ষণ করতে পারেন।
পেরুর সামগ্রিক স্বাস্থ্যচিত্র পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, স্থূলতা একটি জটিল সমস্যা যা কেবল খাদ্যাভ্যাস বা শারীরিক নিষ্ক্রিয়তার ফল নয়; বরং শৈশবের দুর্বলতা এবং আধুনিক সমাজের পরিবেশগত কারণগুলিও এর জন্য দায়ী হতে পারে। বিভিন্ন জাতীয় জরিপ অনুযায়ী পেরুতে স্থূলতার হার ভিন্ন ভিন্ন তথ্য দেয়; যেমন, ২০১২-২০১৩ সালের ENAHO জরিপে স্থূলতার হার ১৯.৭% ছিল, যেখানে সাম্প্রতিক গবেষণায় এই হার ২২% পর্যন্ত দেখা গেছে। মহিলাদের মধ্যে এই হার বিশেষভাবে বেশি, যা সামগ্রিক জনস্বাস্থ্যের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
এই আন্তর্জাতিক কোর্সটি স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীদের জন্য একটি সুযোগ, যেখানে তারা বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে স্থূলতা প্রতিরোধের সর্বশেষ কৌশলগুলি সম্পর্কে অবগত হতে পেরেছেন। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং উন্নত বায়োইলেক্ট্রিক্যাল পরিমাপের মতো প্রযুক্তিগত অগ্রগতিগুলি এই ব্যবস্থাপনাকে আরও সুনির্দিষ্ট করে তুলবে। এই ধরনের উদ্যোগগুলি সমাজের সম্মিলিত প্রচেষ্টার প্রতিফলন ঘটায়, যেখানে প্রতিটি ব্যক্তি তার নিজস্ব সুস্থতার পথে দায়িত্বশীলতার সাথে অগ্রসর হওয়ার প্রেরণা লাভ করে। সম্মিলিত জ্ঞান ও প্রযুক্তির সঠিক প্রয়োগের মাধ্যমে এই স্বাস্থ্যগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় একটি নতুন পথের দিশা পাওয়া সম্ভব।