ব্রিটিশ ইন্ডি মুভি অ্যাওয়ার্ডসে (BIFA) চারটি গুরুত্বপূর্ণ পুরস্কার জিতে শীর্ষে 'পিলিয়ন'

সম্পাদনা করেছেন: An goldy

আলেকজান্ডার স্কারসগার্ড এবং হ্যারি মেলিং অভিনীত বাইকারদের নিয়ে নির্মিত রোমান্টিক ড্রামা 'পিলিয়ন' (Pillion) ব্রিটিশ ইন্ডি ফিল্ম অ্যাওয়ার্ডস (BIFA) মঞ্চে এক বিশাল সাফল্য লাভ করেছে। এই চলচ্চিত্রটি ২০২৩ সালের সমাপ্তিতে প্রধান পুরস্কার 'সেরা ব্রিটিশ ইন্ডি ফিল্ম' জিতে নিয়েছে। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০২২ সালের ৩০ নভেম্বর লন্ডনের বিখ্যাত 'রাউন্ডহাউস' ভেন্যুতে। এই জমকালো অনুষ্ঠানের সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন কৌতুক অভিনেতা লু স্যান্ডার্স এবং হ্যারিয়েট কেমসলি। এই বিজয় প্রমাণ করে যে মূলধারার স্টুডিও প্রযোজনার বাইরে গিয়ে সাহসী এবং ভিন্ন ধারার চলচ্চিত্রগুলো শিল্প জগতে ক্রমশ স্বীকৃতি লাভ করছে।

অ্যাডাম মার্স-জোনসের ২০২০ সালের উপন্যাস 'বক্স হিল' অবলম্বনে নির্মিত এই ছবিটি আরও একাধিক বিভাগে পুরস্কৃত হয়েছে। চলচ্চিত্রটির মাধ্যমে পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করা হ্যারি লাইটন 'সেরা ডেবিউ স্ক্রিনপ্লে'র জন্য সম্মাননা পান। প্রযুক্তিগত দিক থেকেও 'পিলিয়ন' নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করেছে; গ্রেস স্নেল জিতেছেন 'সেরা কস্টিউম ডিজাইন' এবং ডিয়ান্দ্রা ফেরেইরা 'সেরা মেকআপ ও হেয়ার'-এর পুরস্কার। সব মিলিয়ে চারটি পুরস্কার জিতে এই সিনেমাটি অ্যালেক্স গারল্যান্ডের সামরিক ড্রামা 'ওয়ারফেয়ার'-এর সমান সংখ্যক পুরস্কার অর্জন করে, যা ছিল এক উল্লেখযোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা।

যুক্তরাজ্য ও আয়ারল্যান্ডের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত এই চলচ্চিত্রটি এর আগেও আন্তর্জাতিক মঞ্চে প্রশংসা কুড়িয়েছিল। ২০২৩ সালের ১৮ মে কান চলচ্চিত্র উৎসবে 'স্পেশাল ভিউ' বিভাগে এটি সেরা চিত্রনাট্য এবং 'পাম ডগ' পুরস্কার জিতেছিল। পরিচালক লাইটন কাহিনি বিন্যাসের সময় পার্কিং পরিদর্শক এবং একজন বাইকারের মধ্যেকার অপ্রচলিত সম্পর্কটির ওপর বিশেষ মনোযোগ দেন। স্কারসগার্ড, যিনি রে চরিত্রে অভিনয় করেছেন, সিনেমার বিতর্কিত বিষয়বস্তু সত্ত্বেও লাইটনের দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি তার গভীর আস্থা প্রকাশ করেছিলেন।

BIFA ২০২৩ অনুষ্ঠানে 'ওয়ারফেয়ার'ও চারটি পুরস্কারের ভাগীদার হয়, যার মধ্যে ছিল এডিটিং, স্পেশাল ইফেক্টস, সাউন্ড এবং এনসেম্বল পুরস্কার। সন্ধ্যার অন্যান্য উল্লেখযোগ্য বিজয়ীদের মধ্যে ছিলেন অ্যাকিনোলা ডেভিস জুনিয়র, যিনি তার প্রথম চলচ্চিত্র 'মাই ফাদার'স শ্যাডো'-এর জন্য 'সেরা পরিচালক' পুরস্কার লাভ করেন। এই ছবিটি যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকে 'সেরা আন্তর্জাতিক ফিচার ফিল্ম' বিভাগে অস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছে। লাগোস শহরের ১৯৯৩ সালের ২৩ জুনের ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে তৈরি এই সিনেমাটি মোট ১২টি মনোনয়ন পেলেও মাত্র একটি পুরস্কার জিততে সক্ষম হয়। অন্যদিকে, 'দ্য ব্যালাড অফ ওয়ালিস আইল্যান্ড' তিনটি পুরস্কার জিতে নেয়, যার মধ্যে সেরা চিত্রনাট্য এবং সেরা সহ-অভিনয়ের পুরস্কার উল্লেখযোগ্য।

অন্যান্য প্রতিদ্বন্দ্বী চলচ্চিত্র, যেমন 'মাই ফাদার'স শ্যাডো' (১২টি মনোনয়ন) এবং 'আই সোয়ার' (যেটির জন্য রবার্ট আরামায়ো সেরা প্রধান অভিনেতা নির্বাচিত হন), তাদের সাফল্যের মধ্যেও 'পিলিয়ন'-এর এই জয় ব্রিটিশ স্বাধীন চলচ্চিত্রের বৈচিত্র্য ও শক্তির পরিচয় দেয়। পরিচালক লাইটন হাস্যরসাত্মকভাবে স্মরণ করেন যে ২০১৭ সালে স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের জন্য মনোনয়ন পেলেও তিনি সেবার পুরস্কার জেতেননি এবং 'সন্ধ্যাটি শিল্প জগতে সেতু পুড়িয়ে' কাটিয়েছিলেন। তিনি BIFA-কে ধন্যবাদ জানান যে তারা তাকে কালো তালিকাভুক্ত করেননি। BFI ন্যাশনাল লটারি ফিল্মমেকিং ফান্ডের আর্থিক সহায়তায় এই সাফল্য অর্জিত হওয়ায় এটি প্রমাণিত হলো যে সাহসী গল্পগুলো সমালোচক এবং দর্শকদের কাছে সমানভাবে সমাদৃত হচ্ছে।

উৎসসমূহ

  • Far Out Magazine

  • Sky News

  • Screen Daily

  • Film Stories

  • The Upcoming

  • The Guardian

আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?

আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।