পোড়া ক্ষত নিরাময়ের নতুন দিগন্ত: দাগহীন নিরাময় পদ্ধতির উদ্ভাবন
সম্পাদনা করেছেন: Tatyana Гуринович
লিংকোপিং বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা পোড়া ও গুরুতর ক্ষত নিরাময়ের জন্য একটি যুগান্তকারী পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন, যা দাগ ছাড়াই নিরাময় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে সক্ষম। এই উদ্ভাবনী পদ্ধতিতে ক্ষতস্থানে কোষ যুক্ত করা হয় এবং একটি বিশেষ 'স্ক্যাফোল্ড' বা সহায়ক কাঠামো ব্যবহার করা হয় যা কোষের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এর ফলে শরীর স্বাভাবিক নিরাময় প্রক্রিয়ার অনুকরণে কাজ করে এবং দাগ পড়ার সম্ভাবনা অনেকাংশে কমে যায়।
এই গবেষণাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বৃহত্তর প্রকল্পের অংশ, যার মূল লক্ষ্য হলো দীর্ঘস্থায়ী ক্ষত এবং পোড়া আঘাতের চিকিৎসায় উন্নতি সাধন করা। উন্নত প্রযুক্তি এবং ক্লিনিকাল গবেষণার সমন্বয়ে তারা গুরুতর ত্বকের আঘাতপ্রাপ্ত রোগীদের জন্য কার্যকর এবং টেকসই নিরাময় পদ্ধতি বিকাশে সচেষ্ট। এই পদ্ধতিটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য কারণ এটি প্রচলিত চিকিৎসার তুলনায় দাগ কমাতে এবং ত্বকের স্বাভাবিক কার্যকারিতা ফিরিয়ে আনতে সহায়ক হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
গবেষকরা ফাইব্রোব্রোব্লাস্ট কোষ এবং জিলেটিন বিডের সমন্বয়ে একটি জেল তৈরি করেছেন, যা 'স্ক্যাফোল্ড' হিসেবে কাজ করে। এই জেলটি 'ক্লিক কেমিস্ট্রি' ব্যবহার করে হায়ালুরোনিক অ্যাসিডের সাথে যুক্ত করা হয়, যা এটিকে একটি স্থিতিশীল কাঠামো প্রদান করে। এই উদ্ভাবনী উপাদানটি 'স্কিন ইন এ সিরিঞ্জ' নামে পরিচিতি লাভ করেছে এবং এটি সরাসরি ক্ষতস্থানে প্রয়োগ করা যেতে পারে বা থ্রিডি প্রিন্টিংয়ের মাধ্যমে ত্বকের প্রতিস্থাপন হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।
এই প্রযুক্তিটি ইঁদুরের উপর পরীক্ষায় সফল প্রমাণিত হয়েছে এবং এটি পোড়া ও গুরুতর ক্ষতের চিকিৎসায় নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে। গবেষণাটি আরও দেখিয়েছে যে, এই পদ্ধতিতে তৈরি করা ডার্মিস (ত্বকের গভীর স্তর) শুধুমাত্র দাগ কমায় না, বরং ত্বকের স্বাভাবিক স্থিতিস্থাপকতা এবং কার্যকারিতা ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে। প্রচলিত পদ্ধতিতে শুধুমাত্র এপিডার্মিস (ত্বকের উপরিভাগ) প্রতিস্থাপন করা হয়, যা প্রায়শই গুরুতর দাগের কারণ হয়। কিন্তু এই নতুন পদ্ধতিটি ডার্মিসের জটিল গঠনকে অনুকরণ করার চেষ্টা করে, যেখানে রক্তনালী, স্নায়ু এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপাদান থাকে।
এই গবেষণাটি সুইডিশ বিজ্ঞানীদের ত্বকের চিকিৎসা এবং দীর্ঘস্থায়ী ক্ষত নিরাময়ের ক্ষেত্রে অগ্রগতির একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। নতুন পদ্ধতি এবং কৌশল বিকাশের মাধ্যমে তারা রোগীদের দুর্ভোগ কমাতে এবং তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে আশাবাদী।
উৎসসমূহ
Sveriges Radio
Stamcellsforskning kan hjälpa dem med svårläkta sår
এই বিষয়ে আরও খবর পড়ুন:
আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?
আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।
