ইন্দোনেশিয়ার পশ্চিম সুমাত্রার একটি সুপরিচিত আগ্নেয়গিরি মাউন্ট মেরাপি, ১৪ অক্টোবর, ২০২৫, মঙ্গলবার ভোরে এক উল্লেখযোগ্য অগ্ন্যুৎপাতের সাক্ষী হলো। স্থানীয় সময় ভোর ৩:৫২ মিনিটে এই ঘটনাটি ঘটে, যখন পর্বতটি বিপুল পরিমাণ আগ্নেয় পদার্থ নির্গত করে। এই ছাইয়ের মেঘগুলি সাধারণত উত্তর-পূর্ব দিকে প্রবাহিত হতে দেখা যায়। এই ভূতাত্ত্বিক কার্যকলাপের ফলে পশ্চিম সুমাত্রার আঞ্চলিক কর্তৃপক্ষ অবিলম্বে নিরাপত্তা সতর্কতা জারি করে।
ইন্দোনেশিয়ান সেন্টার ফর ভলক্যানোলজি অ্যান্ড জিওলজিক্যাল হ্যাজার্ড মিটিগেশন (PVMBG) নিশ্চিত করেছে যে এই কার্যকলাপের পরেও মাউন্ট মেরাপি 'সতর্কতা' বা লেভেল II অবস্থাতেই রয়েছে। এই পদবিটি নির্দেশ করে যে আগ্নেয়গিরির কার্যকলাপ স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি, তবে এটি কোনো আসন্ন বড় অগ্ন্যুৎপাতের সংকেত দেয় না। ন্যাশনাল ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট এজেন্সি (BNPB)-এর দুর্যোগ তথ্য, যোগাযোগ ও ডেটা সেন্টারের প্রধান আব্দুল মুহারি সরকারি বিবৃতিতে এই সতর্কতার স্তর বজায় থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। অগ্ন্যুৎপাতের সময়কার সিসমোগ্রাম পাঠে দেখা গেছে যে এর সর্বোচ্চ বিস্তার ছিল ৩০.৪ মিলিমিটার এবং এর স্থায়িত্ব ছিল প্রায় এক মিনিট ১১ সেকেন্ড।
ছাই ছড়িয়ে পড়ার প্রতিক্রিয়ায়, যা আগাম রিজেন্সির বাত পালানোর মতো এলাকায় পড়তে দেখা গিয়েছিল, কর্তৃপক্ষ বাসিন্দাদের বায়ুবাহিত কণার সংস্পর্শ এড়াতে ঘরের ভেতরে আশ্রয় নিতে জোরালোভাবে অনুরোধ জানায়। আগাম রিজেন্সি আঞ্চলিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা (BPBD)-এর মতো স্থানীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দলগুলি জনসাধারণকে একান্ত প্রয়োজন না হলে বাড়ি থেকে বের না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে এবং মাস্ক বিতরণ করেছে।
এছাড়াও, আগ্নেয়গিরির ঢালের কাছাকাছি বসবাসকারী সম্প্রদায়গুলির জন্য একটি চলমান নির্দেশিকা রয়েছে: সম্ভাব্য লাহার প্রবাহের উপর নজর রাখা—যা ভূমিকম্পের ঘটনার পরে কাদা ও ধ্বংসাবশেষের বিপজ্জনক স্রোত। এই ধরনের প্রবাহ থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা অপরিহার্য।
২,৮৯১ মিটার উচ্চতায় দণ্ডায়মান মাউন্ট মেরাপি ইন্দোনেশিয়ার সবচেয়ে সক্রিয় আগ্নেয়গিরিগুলির মধ্যে অন্যতম হিসেবে পরিচিত। এর ইতিহাসে ঘন ঘন অগ্ন্যুৎপাতের ঘটনা রয়েছে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ২০২৩ সালের শেষের দিকে ঘটে যাওয়া একটি মারাত্মক ঘটনা, যার ফলে সতর্কতার মাত্রা বৃদ্ধি করা হয়েছিল এবং অস্থায়ীভাবে মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। PVMBG আগ্নেয়গিরিটির অভ্যন্তরীণ গতিবিধি ট্র্যাক করার জন্য অত্যাধুনিক সিসমোগ্রাফিক নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে অবিরাম নজরদারি বজায় রাখে, যা প্রকৃতির মেজাজ পর্যবেক্ষণে তাদের নিরন্তর অঙ্গীকারকে তুলে ধরে।
বর্তমান পরিস্থিতি সুরক্ষা প্রোটোকলগুলির প্রতি সমাজের সুসংগঠিত প্রতিক্রিয়ার প্রতিফলন ঘটায়। যদিও প্রাথমিক পর্যায়ে ঘন কুয়াশার কারণে ছাই স্তম্ভের উচ্চতা দৃশ্যত নিশ্চিত করা কঠিন ছিল, তবে ছাইয়ের উত্তর-পূর্বমুখী গতিপথ স্থানীয় বায়ুমণ্ডলীয় স্রোতগুলির দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে। শক্তির এই সাম্প্রতিক নির্গমন পরিবেশের নৈকট্য এবং গ্রহের অন্তর্নিহিত শক্তির সাথে শ্রদ্ধাপূর্ণ সহাবস্থানের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সম্মিলিত সচেতনতার একটি শক্তিশালী অনুস্মারক হিসেবে কাজ করে।