ইন্দোনেশিয়ার পূর্ব নুসা টেংগারার লেম্বাটা রিজেন্সিতে অবস্থিত মাউন্ট ইলে লেওটোলক আগ্নেয়গিরিটি সম্প্রতি উল্লেখযোগ্যভাবে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। শনিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ তারিখে, আগ্নেয়গিরিটি ৭৩ বার অগ্ন্যুৎপাত করেছে, যা গভীর গুড়গুড় শব্দের সাথে যুক্ত ছিল। এই অগ্ন্যুৎপাতগুলি সকাল ৬টা থেকে ৯টার মধ্যে রেকর্ড করা হয়েছিল, যেখানে ৪ থেকে ২০.৩ মিমি পর্যন্ত বিস্তার এবং ৪০ থেকে ৫৩ সেকেন্ড পর্যন্ত সময়কাল দেখা গেছে। প্রতিটি অগ্ন্যুৎপাতের ফলে ১০০-৪০০ মিটার উচ্চতার সাদা ও ধূসর ছাইয়ের স্তম্ভ তৈরি হয়েছে।
আগ্নেয়গিরিটি বর্তমানে লেভেল III (সিয়াগা/সতর্কতা) স্থিতিতে রয়েছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বাসিন্দাদের আগ্নেয়গিরির কেন্দ্র থেকে কমপক্ষে ৩ কিলোমিটার দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছে। এই পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এবং প্রশমনমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
ইন্দোনেশিয়ার আগ্নেয়গিরিগুলির কার্যকলাপ প্রায়শই প্রশান্ত মহাসাগরীয় 'রিং অফ ফায়ার'-এর অংশ হিসেবে ঘটে, যা বিশ্বের অন্যতম সক্রিয় আগ্নেয়গিরি অঞ্চল। ঐতিহাসিকভাবে, ইন্দোনেশিয়াতে অনেক শক্তিশালী অগ্ন্যুৎপাত হয়েছে, যার মধ্যে ১৮১৫ সালের তাম্বোরা পর্বত এবং ১৮৮৩ সালের ক্রাকাতোয়া উল্লেখযোগ্য। এই ঘটনাগুলি কেবল স্থানীয় পরিবেশকেই প্রভাবিত করেনি, বরং বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের উপরও প্রভাব ফেলেছে। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, ইন্দোনেশিয়ার আগ্নেয়গিরিগুলির কার্যকলাপের ধরনে পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে, যা আরও গভীর অধ্যয়নের প্রয়োজনীয়তা নির্দেশ করে।
আগ্নেয়গিরির ছাইয়ের প্রভাব সুদূরপ্রসারী হতে পারে। এটি কেবল বিমান চলাচলকেই ব্যাহত করে না, বরং স্বাস্থ্যগত সমস্যাও সৃষ্টি করতে পারে। সূক্ষ্ম ছাইয়ের কণাগুলি বায়ুমণ্ডলে দীর্ঘ সময় ধরে থাকতে পারে এবং জলবায়ুর উপর প্রভাব ফেলতে পারে। ছাইয়ের ক্ষয়কারী প্রকৃতি পরিকাঠামো, পরিবহন ব্যবস্থা, বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার ক্ষতি করতে পারে। এছাড়াও, ছাইয়ের অম্লীয় আবরণ বৃষ্টির জলের উৎসকে দূষিত করতে পারে এবং কৃষিকাজের ক্ষতি করতে পারে।
মাউন্ট ইলে লেওটোলকের বর্তমান কার্যকলাপ ইন্দোনেশিয়ার আগ্নেয়গিরিগুলির চলমান সক্রিয়তার একটি অংশ। কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং সম্ভাব্য ঝুঁকি মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত রয়েছে।