মঙ্গলবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫-এর ভোরে গ্রিক দ্বীপ ইউবোয়ার উপকূলে এজিয়ান সাগরে একটি ৫.২ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। এথেন্সের প্রায় ৪৫ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে এবং নিয়া স্তাইরার উপকূল থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে এর কেন্দ্রস্থল ছিল। স্থানীয় সময় রাত প্রায় ০:৩০ মিনিটে এই কম্পন অনুভূত হয়, যা এথেন্স এবং বৃহত্তর আটিকা অঞ্চল জুড়ে তীব্রভাবে অনুভূত হয় এবং বাসিন্দাদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করে।
ভূমিকম্পের পর, বিশেষ করে নিয়া স্তাইরা অঞ্চলের অনেক বাসিন্দা আফটারশকের আশঙ্কায় বাড়ির বাইরে বা তাদের গাড়িতে রাত কাটিয়েছেন। অগ্নিনির্বাপণ পরিষেবার তথ্য অনুযায়ী, এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কোনো বড় ধরনের হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। গ্রিক ফায়ার সার্ভিস কোনো জরুরি কলের খবর পায়নি এবং কোনো ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ারও নিশ্চিত তথ্য মেলেনি।
ভূবিজ্ঞানীদের মতে, গ্রীস ভূমধ্যসাগরের একাধিক ভূতাত্ত্বিক ফল্টের উপর অবস্থিত হওয়ায় এখানে প্রায়শই ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এই অঞ্চলের ভূতাত্ত্বিক গঠন আফ্রিকান প্লেট এবং ইউরেশীয় প্লেটের জটিল মিথস্ক্রিয়ার দ্বারা প্রভাবিত, যা ঘন ঘন ভূমিকম্পের কারণ। সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, এজিয়ান সাগর এবং এর পার্শ্ববর্তী ভূমি উচ্চ সিসমিক কার্যকলাপ এবং জটিল টেকটোনিক নিয়ন্ত্রণের একটি অঞ্চল। এই ভূমিকম্পের ঘটনাটি এই অঞ্চলের ভূতাত্ত্বিক সক্রিয়তার একটি উল্লেখযোগ্য উদাহরণ।
কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং জনসাধারণকে সম্ভাব্য আফটারশক সম্পর্কে সতর্ক থাকতে পরামর্শ দিয়েছে। বিগত বছরগুলিতেও গ্রীস এবং এর আশেপাশে বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে, যেমন ২০২৫ সালের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে সান্তরিনি দ্বীপে তীব্র ভূমিকম্পের ঘটনা ঘটেছিল, যার ফলে হাজার হাজার বাসিন্দা সাময়িকভাবে তাদের বাড়ি ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন। এছাড়াও, ২০২৫ সালের মে মাসে ক্রিট দ্বীপের কাছে একটি ৬.১ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছিল যা মিশর পর্যন্ত অনুভূত হয়েছিল। এই ঘটনাগুলি গ্রীসের ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চলের চিত্র তুলে ধরে।
ভূমিকম্পের পর, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এবং বিশেষজ্ঞরা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। যদিও তাৎক্ষণিক কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি, তবে যেকোনো সম্ভাব্য আফটারশকের জন্য সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। এই ধরনের ঘটনাগুলি কেবল স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্যই নয়, পর্যটকদের জন্যও উদ্বেগের কারণ হতে পারে, কারণ গ্রীস একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। তবে, কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে যে পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে কোনো বড় ধরনের প্রভাব পড়েনি এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।