চীন সম্প্রতি 'নীল তিমি' (Blue Whale) নামে একটি যুগান্তকারী জলযান উন্মোচন করেছে, যা বিশ্বের প্রথম উচ্চ-গতির মনুষ্যবিহীন ডুবোযান হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। এই অত্যাধুনিক যানটি প্রতিকূল আবহাওয়া সহ্য করার জন্য বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছে। ১১ মিটার দীর্ঘ এই যানটি গত ২৮ এপ্রিল, ২০২৫ সালে উন্মোচিত হয় এবং এটি একটি দ্রুতগামী জলযান থেকে একটি নিমজ্জিত গবেষণা প্ল্যাটফর্মে নির্বিঘ্নে রূপান্তরিত হতে পারে।
'নীল তিমি' জলের উপরিতলে ৩৬ নট পর্যন্ত গতি তুলতে সক্ষম এবং ঝড় এড়াতে ৬০ মিটার গভীরে ডুব দিতে পারে। এটি এক মাসেরও বেশি সময় ধরে জলের নিচে স্থির থাকতে পারে। এর উন্নত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) সিস্টেম এবং বিস্তৃত সেন্সর স্যুট সমুদ্রের অবস্থার বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহে সহায়তা করে। এই প্রযুক্তি টাইফুন গবেষণায় বিপ্লব ঘটাতে প্রস্তুত, কারণ এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রিয়েল-টাইম ডেটা সরবরাহ করে পূর্বাভাস নির্ভুলতা এবং দুর্যোগ প্রস্তুতি উন্নত করবে।
গভীর সমুদ্রের অন্বেষণ প্রযুক্তিগতভাবে অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং, কারণ সেখানে রয়েছে বিশাল চাপ, হিমশীতল তাপমাত্রা এবং গভীর অন্ধকার। কিন্তু স্বায়ত্তশাসিত জলযানের (AUVs) অগ্রগতি এই অন্বেষণকে নতুন মাত্রা দিয়েছে। এই রোবোটিক সাবমেরিনগুলি কোনও ক্রু ছাড়াই স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের প্রযুক্তি সমুদ্রের পরিবেশগত পরিবর্তন পর্যবেক্ষণ, জলবায়ু মডেল উন্নত করা এবং টেকসই মৎস্য চাষের মতো ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
'নীল তিমি' ২০২৬ সাল থেকে টাইফুন পর্যবেক্ষণে সক্রিয়ভাবে মোতায়েন করা হবে, যা সামুদ্রিক অন্বেষণ এবং দুর্যোগ প্রশমন কৌশলে একটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি নির্দেশ করে। এই জলযানটি কেবল টাইফুন গবেষণাতেই নয়, বরং সমুদ্রের তলদেশের মানচিত্র তৈরি, পানির গুণমান পরীক্ষা এবং সাবমেরিন কেবল পরিদর্শনের মতো বিভিন্ন কাজেও ব্যবহৃত হবে। এটি প্রায় ৩০ দিন পর্যন্ত পানির নিচে থাকতে পারে এবং প্রতিকূল আবহাওয়ার মধ্যে কাজ চালিয়ে যেতে সক্ষম। 'নীল তিমি'র মতো যানগুলি সমুদ্রের গভীরে লুকিয়ে থাকা অনেক রহস্য উন্মোচনে সহায়ক হবে এবং মানবজাতির জন্য নতুন জ্ঞান ও সুযোগের দ্বার উন্মোচন করবে।