মালয়েশিয়ার সাবাহ প্রদেশে, কোটা কিনাবালুর কাছে মঙ্গ্গিস রানাউ সাবস্টেশনে বিশ্বের প্রথম নিকেল বোটানিক্যাল গার্ডেনটি খোলা হয়েছে। এটি কিনাবালু পার্কের মধ্যে অবস্থিত, যা ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে স্বীকৃত। এই এক হেক্টর আয়তনের উদ্যানটি বিশেষত হাইপারঅ্যাকুমুলেটর উদ্ভিদের সংরক্ষণ ও গবেষণার জন্য নিবেদিত, যারা মাটি থেকে নিকেল শোষণ করে নিজেদের মধ্যে জমা করতে পারে।
এই বাগানে ১২ প্রজাতির বিরল নিকেল-সংগ্রহকারী উদ্ভিদ রয়েছে, যার মধ্যে ফাইলাianthus (Phyllanthus) এবং গ্লচিডিয়ন (Glochidion) এর বিভিন্ন প্রজাতি এবং রিনোরিয়া (Rinorea) প্রজাতি উল্লেখযোগ্য। এই উদ্ভিদগুলি পরিবেশ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে, বিশেষ করে নিকেল-সমৃদ্ধ মাটিতে, গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। হাইপারঅ্যাকুমুলেশন প্রক্রিয়াটি নির্দিষ্ট কিছু উদ্ভিদের ধাতব উপাদান শোষণ করার প্রাকৃতিক ক্ষমতাকে তুলে ধরে, যা ফাইটোরেমেডিয়েশন অর্থাৎ পরিবেশ দূষণমুক্ত করার জন্য উপকারী হতে পারে।
২০১৪ সালে একটি আরবোরেটাম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত এই উদ্যানটি বৈজ্ঞানিক গবেষণা, সংরক্ষণ, শিক্ষা এবং উদ্ভিদ বৈচিত্র্যের প্রতি জনসাধারণের আগ্রহ বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এখানে প্রদর্শিত একটি উদ্ভিদ, জাইলোসমা লুজনেনসিস (Xylosma luzonensis), বিশেষ করে আল্ট্রাম্যাফিক মাটিযুক্ত পরিবেশে ল্যান্ডস্কেপিং এবং ভূমি ক্ষয় নিয়ন্ত্রণে এর সম্ভাবনার জন্য পরিচিত। যদিও এই প্রজাতিটি এখনও বিপন্ন হিসেবে শ্রেণীবদ্ধ হয়নি, তবুও এর সংরক্ষণের জন্য প্রচেষ্টা চলছে।
সম্প্রতি লাবুয়ানে অনুষ্ঠিত বোর্নিও ফ্লোরা ফেস্টিভ্যালে (Borneo Flora Festival) জাইলোসমা লুজনেনসিসের মতো উদ্ভিদগুলিতে নিকেলের উপস্থিতি প্রদর্শন করা হয়েছিল। মালয়েশিয়ার রানী রাজা জারীথ সোফিয়া (Raja Zarith Sofiah) সহ দর্শনার্থীরা বিশেষ কাগজ ব্যবহার করে উদ্ভিদের পাতায় নিকেলের উপস্থিতি পরীক্ষা করেন, যা পাতার সংস্পর্শে এসে গোলাপী বর্ণ ধারণ করে। এই উদ্যোগটি এই অসাধারণ উদ্ভিদ প্রজাতিগুলি সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে উদ্যানের প্রতিশ্রুতিকে তুলে ধরে।
গবেষণায় দেখা গেছে যে, ফাইলাianthus (Phyllanthus) প্রজাতির কিছু উদ্ভিদ, যেমন ফাইলাianthus এরিথ্রোপ্রিকাস (P. erythrotrichus) এবং ফাইলাianthus সিকিউরিনেগয়েডিস (P. securinegoides), তাদের পাতায় ১০,০০০ পিপিএম (ppm) এর বেশি নিকেল জমা করতে পারে। এটি ফাইটোরেমেডিয়েশন এবং খনি-ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার পুনরুদ্ধারের জন্য তাদের উল্লেখযোগ্য সম্ভাবনা নির্দেশ করে। এই উদ্ভিদগুলি পরিবেশের উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে এবং টেকসই প্রযুক্তির বিকাশে সহায়তা করতে পারে। এই উদ্যানটি প্রকৃতির এই বিস্ময়কর ক্ষমতাকে তুলে ধরে এবং পরিবেশ সুরক্ষায় উদ্ভিদের ভূমিকা সম্পর্কে জ্ঞান বৃদ্ধিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে।