কেরালার বৈজ্ঞানিক উদ্ভাবনের প্রতি অঙ্গীকার R&D Summit 2025-এ বিশেষভাবে প্রদর্শিত হয়েছে, যেখানে গবেষকরা ফ্লোরা থেকে প্রাপ্ত যুগান্তকারী পণ্য উন্মোচন করেছেন। এই অনুষ্ঠানটি রাজ্যের বৈজ্ঞানিক গবেষণাকে সমাজের প্রয়োজনে ব্যবহারিক সমাধানে রূপান্তর করার প্রতিশ্রুতির উপর আলোকপাত করেছে।
সবচেয়ে আকর্ষণীয় উদ্ভাবনগুলির মধ্যে একটি ছিল 'ট্রপিক্যাল সয়েল সেন্ট', যা জওহরলাল নেহেরু ট্রপিক্যাল বোটানিক গার্ডেন এবং রিসার্চ ইনস্টিটিউট দ্বারা তৈরি করা হয়েছে। এই সুগন্ধিটি উদ্ভিদের উপর ভিত্তি করে রসায়ন ব্যবহার করে বৃষ্টির পর শুকনো মাটির সেই পরিচিত গন্ধকে (পেট্রিকোর) ধারণ করে। পেট্রিকোর হলো বৃষ্টির পর শুকনো মাটিতে পড়ার ফলে সৃষ্ট একটি মাটির মতো গন্ধ, যা মূলত অ্যাকটিনোমাইসেটিস নামক মাটির ব্যাকটেরিয়ার দ্বারা উৎপাদিত জিওসমিন নামক যৌগের কারণে হয়। অস্ট্রেলিয়ান বিজ্ঞানীরা ১৯৬৪ সালে এই গন্ধের নামকরণ করেন। হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিতে, বিশেষ করে বেলে বা এঁটেল মাটিতে এই গন্ধ সবচেয়ে বেশি অনুভূত হয়। আরেকটি উল্লেখযোগ্য প্রদর্শনী ছিল 'অ্যাকোয়া ফ্লোরা-ইনফিউজ', যা মালবার বোটানিক গার্ডেন এবং ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যান্ট সায়েন্সেস দ্বারা তৈরি একটি ক্যাফেইন-মুক্ত ভেষজ পানীয়। এই পানীয়টি পদ্ম ফুলের স্বাস্থ্য উপকারিতা এবং অপরাজিতা ফুলের প্রাকৃতিক রঙকে মিশ্রিত করে একটি নতুন এবং স্বাস্থ্যকর পানীয় সরবরাহ করে। পদ্ম ফুল অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর, যা ফ্রি র্যাডিকেলগুলির বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং হৃদরোগ, ডায়াবেটিস এবং কিছু ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে। অপরাজিতা ফুলও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ, যা ত্বক ও চুলের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে এবং প্রদাহ কমাতে সহায়ক। এটি মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়াতে এবং স্মৃতিশক্তি উন্নত করতেও পরিচিত।
এই উদ্ভাবনগুলি কেরালার গবেষণা ও উন্নয়ন সামিট 2025-এর অংশ ছিল, যেখানে রাজ্যের বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান তাদের কাজ প্রদর্শন করে। এই ধরনের উদ্যোগগুলি রাজ্যের বৈজ্ঞানিক উদ্ভাবনের বাস্তুতন্ত্রকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি টেকসই সমাধানের দিকে পরিচালিত করে।