ট্যাপোসিরিস ম্যাগনা মন্দিরের কাছে নিমজ্জিত বন্দর ক্লিওপেট্রার সমাধিস্থলের ইঙ্গিত দেয়

সম্পাদনা করেছেন: Tetiana Martynovska 17

মিশরের প্রত্নতাত্ত্বিকরা আলেকজান্দ্রিয়ার প্রায় ৫০ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত ট্যাপোসিরিস ম্যাগনা মন্দিরের কাছে একটি নিমজ্জিত বন্দরের সন্ধান পেয়েছেন। এই আবিষ্কারটি ইঙ্গিত দেয় যে ক্লিওপেট্রা সপ্তম-এর শাসনামলে এই অঞ্চলটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সামুদ্রিক কেন্দ্র ছিল। প্রত্নতাত্ত্বিক ক্যাথলিন মার্টিনেজ, যিনি দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে ক্লিওপেট্রার সমাধি অনুসন্ধানে নিয়োজিত রয়েছেন, তিনি এই অঞ্চলের উপর তার গবেষণার মাধ্যমে এই তত্ত্বকে সমর্থন করেছেন যে ক্লিওপেট্রা সম্ভবত মার্ক অ্যান্টনির সাথে এখানেই সমাহিত হয়েছিলেন।

মার্টিনেজের দল, সান্টো ডোমিঙ্গোর পেড্রো হেনরিকুয়েজ উরেনা ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সহযোগিতায়, শত শত মানব দেহাবশেষ, যার মধ্যে স্বর্ণের পাত দিয়ে সজ্জিত মমি এবং ক্লিওপেট্রার প্রতিকৃতি সহ কয়েন ও মৃৎপাত্রও রয়েছে, তা আবিষ্কার করেছে। এই আবিষ্কারগুলি ট্যাপোসিরিস ম্যাগনা-র টলেমাইক যুগের গুরুত্ব সম্পর্কে নতুন ধারণা প্রদান করে এবং ক্লিওপেট্রা ও তার সময়কালের ইতিহাস সম্পর্কে আমাদের জ্ঞানকে আরও সমৃদ্ধ করতে পারে।

এই নিমজ্জিত বন্দরটি কেবল একটি ধর্মীয় স্থান ছিল না, বরং এটি একটি সক্রিয় বাণিজ্য কেন্দ্রও ছিল যা স্থলপথ এবং মারিওটিস হ্রদকে আলেকজান্দ্রিয়ার সাথে সংযুক্ত করত। বন্দরটিতে বিভিন্ন আকারের পাথর ও ধাতব নোঙ্গর এবং টলেমাইক যুগের বহু সংখ্যক অ্যাম্ফোরা (প্রাচীন পাত্র) পাওয়া গেছে। এই বন্দরটি মন্দিরের সাথে সংযুক্ত ছিল বলে মনে করা হয়, যা একটি সমন্বিত নেটওয়ার্কের ইঙ্গিত দেয় যা রানীর সমাধির কাজে ব্যবহৃত হতে পারত।

ক্যাথলিন মার্টিনেজ প্রায় ২০ বছর ধরে ক্লিওপেট্রার সমাধি খুঁজে বের করার জন্য গবেষণা করছেন। তিনি বিশ্বাস করেন যে ক্লিওপেট্রা রোমানদের হাত থেকে বাঁচতে এবং তার উত্তরাধিকারকে সুরক্ষিত রাখতে এই স্থানটিকে বেছে নিয়েছিলেন। ট্যাপোসিরিস ম্যাগনা-র নামটির অর্থ 'ওসাইরিসের মহান সমাধি', যা মৃত্যু ও পুনর্জন্মের দেবতা ওসাইরিসের সাথে সম্পর্কিত। মন্দিরের নিচে আবিষ্কৃত ৪,৩০০ ফুট দীর্ঘ সুড়ঙ্গটিও এই তত্ত্বকে আরও শক্তিশালী করে, কারণ এটি সমুদ্রের দিকে প্রসারিত এবং এতে ক্লিওপেট্রার আমলের নিদর্শন পাওয়া গেছে।

এই আবিষ্কারগুলি ট্যাপোসিরিস ম্যাগনা-র ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক তাৎপর্যকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে এবং এটি কেবল একটি ধর্মীয় স্থান হিসেবেই নয়, বরং একটি গুরুত্বপূর্ণ সামুদ্রিক কেন্দ্র হিসেবেও এর ভূমিকা তুলে ধরেছে। প্রত্নতাত্ত্বিকরা মনে করেন যে এই বন্দরটি ক্লিওপেট্রার সময়ে সক্রিয় ছিল এবং সম্ভবত তার শেষ যাত্রার কেন্দ্রবিন্দু ছিল। মার্টিনেজ তার অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছেন এবং তিনি বিশ্বাস করেন যে ক্লিওপেট্রার সমাধি খুঁজে পাওয়া কেবল সময়ের ব্যাপার।

উৎসসমূহ

  • BUKA

  • National Geographic

আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?

আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।