বিনিয়োগ জগতের কিংবদন্তি ওয়ারেন বাফেট সম্প্রতি তাঁর ৯৫তম জন্মদিন উদযাপন করেছেন, যা তাঁর অসাধারণ প্রাণশক্তি এবং দীর্ঘ জীবনের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তাঁর এই দীর্ঘ ও সুস্থ জীবনযাপনের রহস্য মূলত তাঁর বিশেষ খাদ্যাভ্যাস, জীবনযাত্রা এবং মানসিক সুস্থতার উপর নির্ভরশীল।
বাফেটের খাদ্যতালিকায় রয়েছে চিজবার্গার, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই এবং আইসক্রিমের মতো ফাস্ট ফুড। তিনি প্রতিদিন অন্তত পাঁচ ক্যান কোকা-কোলা পান করেন। নিজের এই খাদ্যাভ্যাস সম্পর্কে তিনি বলেন, “আমি ছোটবেলা থেকেই যা খেতে ভালোবাসি, তাই খাই।” এই ব্যতিক্রমী পদ্ধতি ইঙ্গিত দেয় যে ব্যক্তিগত পছন্দ এবং তৃপ্তি তাঁর সুস্থতার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
খাদ্যাভ্যাসের বাইরেও, বাফেট একটি সরল জীবনযাপন করেন। শারীরিক পুনরুদ্ধার এবং মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বজায় রাখার জন্য তিনি প্রতিদিন আট ঘণ্টা ঘুমানোর উপর জোর দেন। এছাড়াও, তিনি নিয়মিত পড়াশোনা, কার্ড খেলা (বিশেষ করে ব্রিজ) এবং চিন্তাভাবনার মাধ্যমে তাঁর মনকে সক্রিয় রাখেন, যা তাঁর মস্তিষ্ককে সতেজ রাখে এবং স্মৃতিভ্রংশের ঝুঁকি কমায় বলে তিনি বিশ্বাস করেন।
দীর্ঘজীবনের জন্য বাফেট সুখকে একটি প্রধান উপাদান হিসেবে বিবেচনা করেন। তাঁর মতে, আইসক্রিম বা কোলা-র মতো সাধারণ আনন্দ উপভোগ করা তাঁর সামগ্রিক সুস্থতা এবং একটি ভারসাম্যপূর্ণ জীবনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গবেষণায় দেখা গেছে যে, সামাজিক সম্পর্ক, মানসিক সুস্থতা এবং জ্ঞানীয় কার্যকলাপ দীর্ঘায়ুর জন্য অপরিহার্য। ওয়ারেন বাফেট তাঁর দীর্ঘস্থায়ী বন্ধুত্ব, যেমন বিল গেটসের সাথে তাঁর সম্পর্ক এবং চার্লি মাঙ্গারের (যিনি ৯৯ বছর বয়সে মারা যান) সাথে তাঁর অংশীদারিত্বের মাধ্যমে এটি প্রমাণ করেছেন। হার্ভার্ড স্টাডি অফ অ্যাডাল্ট ডেভেলপমেন্টের মতো দীর্ঘমেয়াদী গবেষণাগুলি নিশ্চিত করে যে, ইতিবাচক সম্পর্ক মানসিক চাপ কমায়, মানসিক সুস্থতা বাড়ায় এবং দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি হ্রাস করে।
বাফেটের জীবনযাত্রা প্রমাণ করে যে, দীর্ঘ, সুস্থ এবং উৎপাদনশীল জীবনযাপনের জন্য কঠোর খাদ্যতালিকা বা ব্যয়বহুল ব্যায়ামের প্রয়োজন নেই। বরং, এটি ভারসাম্য, মানসিক উদ্দীপনা, সুখ এবং জীবন উপভোগ করার ক্ষমতার উপর জোর দেয়। তাঁর এই অপ্রচলিত অভ্যাসগুলি অসাধারণ দীর্ঘায়ুর দিকে পরিচালিত করেছে।