সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চালিত কথোপকথন মানুষের বার্ধক্য সম্পর্কিত ধারণাকে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত করতে পারে। প্রায় ২০০০ জনেরও বেশি অংশগ্রহণকারীর উপর পরিচালিত এই সমীক্ষায়, অংশগ্রহণকারীরা বার্ধক্য নিয়ে তাদের নিজস্ব মতামত এআই-এর সাথে আলোচনা করেন। এরপর এআই সেই মতামতগুলির স্বপক্ষে বা বিপক্ষে প্রমাণ উপস্থাপন করে।
এই প্রক্রিয়ার ফলে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে বার্ধক্য সম্পর্কে প্রচলিত বিশ্বাসের প্রায় ২০% হ্রাস লক্ষ্য করা গেছে। এই প্রভাব এতটাই শক্তিশালী ছিল যে যারা বার্ধক্য নিয়ে দৃঢ়ভাবে ঐতিহ্যবাহী ধারণা পোষণ করতেন, তাদের মধ্যেও পরিবর্তন দেখা যায়। এমনকি কোভিড-১৯ মহামারীর সময়েও এই প্রভাব পরিলক্ষিত হয়েছে। গবেষকদের মতে, এআই-এর মাধ্যমে তথ্য উপস্থাপন মানুষের বিশ্বাসকে পরিবর্তন করতে সক্ষম এবং এটি বার্ধক্য নিয়ে সমাজের আরও স্বাস্থ্যকর মনোভাব তৈরি করতে একটি শক্তিশালী মাধ্যম হিসেবে কাজ করতে পারে। এই গবেষণার ফলাফলগুলি এআই-এর ক্ষমতাকে তুলে ধরে, যা কেবল তথ্য সরবরাহই নয়, বরং সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি গঠনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
এই প্রেক্ষাপটে, একটি পৃথক কোরীয় সমীক্ষা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এই সমীক্ষায় ১০,০০০ জন কিশোর-কিশোরীর উপর একটি জরিপ চালানো হয়েছিল, যেখানে ৪৩.৯% অংশগ্রহণকারী জানিয়েছেন যে বার্ধক্য সম্পর্কে তাদের ধারণা পরিবর্তন করা তাদের জন্য সহজ। এই তথ্য ইঙ্গিত দেয় যে তরুণ প্রজন্ম নতুন দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি বেশ উন্মুক্ত এবং তারা পরিবর্তনের জন্য প্রস্তুত। এই প্রজন্মের মধ্যে নতুন ধারণা গ্রহণের এই প্রবণতা, এআই-এর মতো প্রযুক্তির মাধ্যমে বার্ধক্য সম্পর্কে প্রচলিত ভুল ধারণাগুলি দূর করার সম্ভাবনাকে আরও বাড়িয়ে তোলে।
গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফলগুলি আরও নির্দেশ করে যে এআই-চালিত সংলাপ তথ্য প্রচারের একটি মূল্যবান পদ্ধতি হতে পারে। এটি বার্ধক্য নিয়ে সমাজের ভুল ধারণাগুলি মোকাবিলা করতে এবং এমনকি সামাজিক বিচ্ছিন্নতা কমাতেও সহায়ক হতে পারে। প্রযুক্তির এই অগ্রগতি বার্ধক্যকে একটি ইতিবাচক ও স্বাভাবিক জীবনচক্র হিসেবে দেখতে মানুষকে উৎসাহিত করার নতুন দ্বার উন্মোচন করেছে, যা সামগ্রিকভাবে একটি সুস্থ সমাজ গঠনে অবদান রাখতে পারে।