দীর্ঘ ও সুস্থ জীবন লাভের চাবিকাঠি নিহিত রয়েছে সাধারণ কিছু অভ্যাসের মধ্যে, যা বাণিজ্যিক সমাধানের চেয়ে অনেক বেশি কার্যকরী। গবেষণায় দেখা গেছে, আবেগ প্রকাশের ক্ষমতা, যা ক্যাথারসিস নামে পরিচিত, দীর্ঘায়ুতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ঐতিহাসিকভাবে, নারীদের তাদের অনুভূতি প্রকাশে উৎসাহিত করা হয়েছে, যা পুরুষদের তুলনায় তাদের দীর্ঘ গড় আয়ুর একটি কারণ হতে পারে। তবে, সামাজিক রীতিনীতির পরিবর্তনের সাথে সাথে পুরুষরাও আবেগ প্রকাশে আরও স্বচ্ছন্দ হচ্ছেন, যা এই ব্যবধান কমাতে সাহায্য করতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা শারীরিক কার্যকলাপের উপরও জোর দিয়েছেন। সপ্তাহে অন্তত চারদিন ১৫-২০ মিনিট হাঁটা অত্যন্ত উপকারী বলে মনে করা হয়। এই হাঁটা বাড়িতে সুবিধামত সময়ে করা যেতে পারে, যেখানে পর্যাপ্ত জল পান করা এবং আরামদায়ক পোশাক পরা জরুরি। একটি স্বাস্থ্যকর খাদ্য তালিকার উপর মনোযোগ দেওয়া উচিত, তবে তা যেন কোনোভাবেই সীমাবদ্ধ বা অতিরিক্ত ব্যয়বহুল না হয়। দীর্ঘজীবী হওয়ার সংখ্যার উপর জোর না দিয়ে, জীবন ও সুস্থতাকে উপভোগ করার উপর বেশি মনোযোগ দেওয়া উচিত।
নতুন গবেষণা অনুযায়ী, যারা নিয়মিত হাঁটেন, তাদের জীবনকাল প্রায় পাঁচ বছর পর্যন্ত বাড়তে পারে। যারা কম সক্রিয়, তারা তাদের জীবনযাত্রায় হাঁটা অন্তর্ভুক্ত করে ১১ বছর পর্যন্ত দীর্ঘায়ু লাভ করতে পারে। প্রতি ঘন্টায় হাঁটা প্রায় ছয় ঘন্টা জীবনকাল বৃদ্ধি করতে পারে। দ্রুত গতিতে ১৫ মিনিটের হাঁটা মৃত্যুর ঝুঁকি প্রায় ২০% কমাতে পারে, বিশেষ করে কার্ডিওভাসকুলার রোগের ক্ষেত্রে।
আবেগ প্রকাশের ক্ষেত্রে, যদিও ঐতিহাসিকভাবে মহিলাদের বেশি আবেগপ্রবণ মনে করা হয়, সাম্প্রতিক গবেষণাগুলি ইঙ্গিত দেয় যে পুরুষ ও মহিলা উভয়েই সমানভাবে আবেগ অনুভব করেন, তবে তাদের প্রকাশের ধরণ ভিন্ন হতে পারে। সামাজিক প্রত্যাশা এবং ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা এই প্রকাশের উপর প্রভাব ফেলে। পুরুষরা প্রায়শই তাদের আবেগ দমন করে বা নির্দিষ্ট উপায়ে প্রকাশ করে, যেমন শারীরিক কার্যকলাপ বা আগ্রাসন। অন্যদিকে, মহিলারা প্রায়শই সহানুভূতি, আনন্দ বা দুঃখের মতো আবেগগুলি প্রকাশে বেশি স্বচ্ছন্দ বোধ করেন, যা তাদের সামাজিক সম্পর্ক উন্নত করতে সাহায্য করে। স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের ক্ষেত্রে, মেডিটারেনিয়ান ডায়েট দীর্ঘায়ুর জন্য একটি অন্যতম সেরা পথ হিসেবে বিবেচিত হয়। এই খাদ্যাভ্যাসে প্রচুর পরিমাণে ফল, সবজি, শস্য, বাদাম এবং জলপাই তেল অন্তর্ভুক্ত থাকে, যা হৃদরোগ এবং বার্ধক্যজনিত রোগের ঝুঁকি কমায়। এই ধরনের খাদ্য গ্রহণ কেবল শারীরিক স্বাস্থ্যই উন্নত করে না, বরং মানসিক সুস্থতাও বৃদ্ধি করে।