৮৫ বছর বয়সী জার্মান মহিলা এরিকা রিশকো তার ফিটনেস এবং সক্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া উপস্থিতির জন্য বিশ্বজুড়ে পরিচিতি লাভ করেছেন। মাত্র ৫৫ বছর বয়সে ফিটনেস যাত্রা শুরু করে, রিশকো বর্তমানে ফাংশনাল ট্রেনিং, স্পিনিং, রোয়িং, যোগা, পিলেটস, টিআরএক্স এবং নাচের মতো বিভিন্ন ধরনের ওয়ার্কআউটে অংশ নেন। তিনি সপ্তাহে একাধিকবার, প্রায়শই তার স্বামী ডিটারের সাথে অনুশীলন করেন।
২০২০ সালে, রিশকো ইনস্টাগ্রামে তার ফিটনেস ভিডিও শেয়ার করা শুরু করেন এবং পরে টিকটকেও জনপ্রিয়তা লাভ করেন, যেখানে তার ভিডিও লক্ষ লক্ষ লাইক এবং মিডিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। অতীতে মেরুদণ্ডের সমস্যা থাকা সত্ত্বেও, যার জন্য অস্ত্রোপচারও করাতে হয়েছিল, রিশকো তার ব্যায়ামের প্রতি অঙ্গীকার বজায় রেখেছেন। তিনি তার প্রাণবন্ত থাকার কারণ হিসেবে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, মদ্যপান ও ধূমপান বর্জন করার কথা বলেন।
রিশকো-র মূল উদ্দেশ্য হলো অন্যদের, বিশেষ করে বয়স্কদের, সক্রিয় থাকতে এবং জীবন উপভোগ করতে অনুপ্রাণিত করা। এই বার্তা তিনি তার “ইটস নেভার টু লেট টু গেট ফিট” (It's Never Too Late to Get Fit) বইটিতেও ভাগ করে নিয়েছেন। বয়স্কদের জন্য ব্যায়ামের গুরুত্ব অপরিসীম। নিয়মিত শারীরিক কার্যকলাপ বার্ধক্যজনিত রোগ প্রতিরোধ করে, পড়ে যাওয়ার ঝুঁকি কমায়, মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায় এবং জ্ঞানীয় কার্যকারিতা বাড়ায়।
জার্মানির মতো দেশে, যেখানে বয়স্ক নাগরিকদের সক্রিয় জীবনযাত্রার উপর জোর দেওয়া হয়, সেখানে এরিকা রিশকো-র মতো ব্যক্তিত্বরা একটি বড় অনুপ্রেরণা। প্রায় ৪৪ শতাংশ জার্মান বয়স্ক নাগরিক নিয়মিত ব্যায়াম করেন, যা গত শতাব্দীর তুলনায় অনেক বেশি। এই সক্রিয়তা কেবল শারীরিক সুস্থতাই নয়, সামাজিক সংযোগ এবং মানসিক সুস্থতাও বৃদ্ধি করে।
সোশ্যাল মিডিয়া ফিটনেস জগতে একটি বড় প্রভাব ফেলেছে। এরিকা রিশকো-র মতো ফিটনেস ইনফ্লুয়েন্সাররা তাদের ভিডিও এবং জীবনযাত্রার মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ মানুষকে, বিশেষ করে বয়স্কদের, সক্রিয় জীবনধারা গ্রহণ করতে উৎসাহিত করছেন। যদিও সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেক সময় অবাস্তব শারীরিক আদর্শ তুলে ধরা হয়, তবে এরিকা রিশকো দেখিয়েছেন যে বয়স কোনো বাধা নয়। তিনি প্রমাণ করেছেন যে সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং নিয়মিত ব্যায়ামের মাধ্যমে যে কেউ সুস্থ ও সক্রিয় জীবনযাপন করতে পারে। তার এই উদ্যোগ প্রমাণ করে যে, ফিটনেস কেবল তরুণদের জন্য নয়, যেকোনো বয়সের মানুষের জন্য উপভোগ্য এবং অর্জনযোগ্য।