সাম্প্রতিক গবেষণা অনুযায়ী, বিড়াল মানুষের কথা বুঝতে পারে এবং তাদের কণ্ঠস্বরের প্রতি সাড়া দেয়। তারা তাদের মালিকের বলা প্রায় একশটি শব্দ মনে রাখতে পারে এবং নিজেদের নামও চিনতে পারে। বিড়াল নির্দিষ্ট শব্দকে বিভিন্ন বস্তু বা কাজের সাথে যুক্ত করতে পারে। তবে, তাদের মনোযোগের প্রধান কেন্দ্রবিন্দু হলো কণ্ঠস্বরের স্বর বা সুর। বিড়াল তাদের মালিকের মেজাজ বুঝতে পারে কণ্ঠস্বরের মাধ্যমে। মালিকের অসন্তুষ্টির স্বর শুনলে তারা আঁচড়াতে পারে, আবার স্নেহের ডাক শুনলে তারা আনন্দে এগিয়ে আসে।
বিড়ালের সাথে যোগাযোগ একটি সম্পূর্ণ ভাষা। তারা বিভিন্ন ধরনের শব্দ যেমন – মিউ মিউ ডাক, হিসহিস শব্দ এবং গরগর শব্দ ব্যবহার করে। এছাড়াও, তাদের কান ও লেজের নড়াচড়া তাদের আবেগ প্রকাশ করে। বিড়াল তাদের অনুভূতি প্রকাশ করতে বা মনোযোগ আকর্ষণ করতে বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি এবং হালকা কামড় ব্যবহার করে। সুতরাং, মানুষ ও বিড়ালের মধ্যে কেবল শব্দের মাধ্যমেই নয়, বরং আবেগ, অঙ্গভঙ্গি এবং শব্দের মাধ্যমেও একটি সম্পূর্ণ যোগাযোগ সম্ভব।
গবেষণায় দেখা গেছে যে, বিড়াল তাদের মালিকের কণ্ঠস্বর চিনতে পারে এবং তারা যখন তাদের মালিকের সাথে কথা বলে তখন তারা বেশি মনোযোগী হয়। একটি গবেষণায় ১৬টি বিড়ালকে তাদের মালিকের এবং অপরিচিত ব্যক্তির কণ্ঠস্বর শোনানো হয়েছিল। ফলাফল অনুযায়ী, বিড়ালরা তাদের মালিকের কণ্ঠস্বরের প্রতি বেশি সাড়া দেয়, বিশেষ করে যখন তাদের মালিকের কণ্ঠস্বরে স্নেহের সুর থাকে। তারা মালিকের কণ্ঠস্বর এবং অপরিচিত ব্যক্তির কণ্ঠস্বরের মধ্যে পার্থক্য করতে পারে।
এই গবেষণাটি আরও প্রমাণ করে যে, বিড়াল এবং মানুষের মধ্যে একটি দৃঢ় মানসিক বন্ধন তৈরি হতে পারে। বিড়ালরা তাদের মালিকের কণ্ঠস্বরের সুরের মাধ্যমে তাদের মেজাজ বুঝতে পারে এবং সেই অনুযায়ী প্রতিক্রিয়া জানায়। যেমন, মালিকের কণ্ঠস্বরে বিরক্তি থাকলে তারা আঁচড়াতে পারে, আবার আনন্দ থাকলে তারা স্নেহের জন্য এগিয়ে আসে। এথোলজি হলো প্রাণি আচরণের বিজ্ঞান। এটি বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণীর আচরণ, তাদের উৎপত্তি এবং বিকাশের উপর গবেষণা করে। বিড়ালদের এই আচরণগত বৈশিষ্ট্যগুলো তাদের বুদ্ধিমত্তা এবং মানুষের সাথে তাদের গভীর সম্পর্ককে তুলে ধরে। তারা কেবল শব্দই নয়, বরং মানুষের কণ্ঠস্বরের সুর এবং আবেগও বুঝতে পারে, যা তাদের সাথে আমাদের বন্ধনকে আরও দৃঢ় করে।