নুরেমবার্গ ট্রাইব্যুনাল: ইউএফএমজি-তে প্রদর্শনীতে যুগপৎ অনুবাদের জন্মকথা

সম্পাদনা করেছেন: Vera Mo

ব্রাজিলের ফেডারেল ইউনিভার্সিটি অফ মিনাস গেরাইসে (UFMG) সম্প্রতি একটি বিশেষ প্রদর্শনীর উদ্বোধন করা হয়েছে। এই প্রদর্শনীর শিরোনাম হলো, “১টি আদালত, ৪টি ভাষা – নুরেমবার্গে যুগপৎ অনুবাদের অগ্রদূতগণ”। ২০২৩ সালের ১০ নভেম্বর সন্ধ্যা ৭টায় (১৯:০০) বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ভবনে এর আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়। এই প্রদর্শনীর মূল উদ্দেশ্য হলো কীভাবে ঐতিহাসিক ঘটনাপ্রবাহ আন্তঃসাংস্কৃতিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে মৌলিক পরিবর্তনকে উদ্দীপিত করে, তা স্পষ্টভাবে তুলে ধরা।

১৯৪৫ সাল থেকে ১৯৪৬ সাল পর্যন্ত অনুষ্ঠিত নুরেমবার্গ ট্রাইব্যুনাল শুধুমাত্র আধুনিক আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আইনের ভিত্তি স্থাপন করেনি, বরং পেশাদার যুগপৎ অনুবাদের বিকাশেরও সূচনা করেছিল। সেই সময়ে, বিভিন্ন সংস্কৃতির মধ্যে তাৎক্ষণিক এবং নির্ভুল তথ্য বিনিময়ের প্রয়োজনীয়তা মানবজাতি তীব্রভাবে অনুভব করেছিল। এর আগে আন্তর্জাতিক যোগাযোগ প্রায়শই ফরাসি ভাষা অথবা ধারাবাহিক অনুবাদের (consecutive interpretation) উপর নির্ভরশীল ছিল, যা বিচারিক প্রক্রিয়াকে উল্লেখযোগ্যভাবে ধীর করে দিত এবং সময়ের অপচয় ঘটাত।

প্রদর্শনীর কিউরেটর, জার্মান অনুবাদক এলকে লিমবার্গার-কাৎসুমি, উল্লেখ করেছেন যে এর আগে যুগপৎ অনুবাদের যত প্রচেষ্টা হয়েছিল, সবই ছিল অপেশাদার এবং কাঙ্ক্ষিত ফল দিতে ব্যর্থ হয়েছিল। এই নতুন পদ্ধতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে মূল ভূমিকা পালন করেছিলেন ফ্রাঙ্কো-আমেরিকান গবেষক লিওন ডস্টার (১৯০৪–১৯৭১), যিনি অনুবাদ বিভাগের নেতৃত্ব দেন। ডস্টার একটি গুরুত্বপূর্ণ নীতি প্রবর্তন করেছিলেন: প্রতিটি অনুবাদককে কেবল একটি বিদেশী ভাষা থেকে তার নিজস্ব মাতৃভাষায় অনুবাদ করতে হবে। এই নীতি উচ্চ প্রশিক্ষণ এবং একটি পরিমিত গতির বক্তৃতা বজায় রাখার দাবি করত। উল্লেখযোগ্য অসুবিধা সত্ত্বেও, এই পদ্ধতি অর্থের নির্ভরযোগ্য স্থানান্তর নিশ্চিত করেছিল।

ভাষাবিদদের কাজের পরিবেশ ছিল অত্যন্ত কঠিন এবং চ্যালেঞ্জিং। অনুবাদকদের গুরুতর প্রযুক্তিগত সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছিল: আদালতের হল জুড়ে বিশাল তারের জট ছিল, এবং বিশেষজ্ঞরা নিজেরাই অস্বস্তিকর সরঞ্জাম সহ ছোট ছোট কেবিনে বসে কাজ করতেন। মাইক্রোফোনগুলি ছিল বিশাল আকারের এবং দেড় ঘণ্টার শিফটে কাজ করা তিনজন বিশেষজ্ঞের মধ্যে হাতবদল করতে হতো। গবেষকরা হিসাব করেছেন যে এই ২১৬ দিনের বিচার প্রক্রিয়ায় যুগপৎ অনুবাদকরা এই পরিস্থিতিতে প্রায় দেড় হাজার (১,৫০০) ঘণ্টা ব্যয় করেছেন।

ভাষাগত চ্যালেঞ্জগুলিও ছিল যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। নাৎসি শাসন (১৯৩৩–১৯৪৫) দ্বারা পরিবর্তিত জার্মান ভাষায় বিশেষ পরিভাষা অন্তর্ভুক্ত ছিল, যেমন গ্যাস চেম্বার এবং কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্প সম্পর্কিত শব্দাবলী, যা অনুবাদকদের কাছে সম্পূর্ণ নতুন ছিল। এই প্রদর্শনীতে সেই ভাষাবিদদের ব্যতিক্রমী দক্ষতা তুলে ধরা হয়েছে, যারা কেবল প্রযুক্তিগত মধ্যস্থতাকারী ছিলেন না, বরং একটি নতুন বৈশ্বিক সংলাপে স্থপতি হিসেবে কাজ করেছিলেন। তাদের কাজ বিচার প্রক্রিয়াকে দ্রুততর করেছিল এবং গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলি নথিভুক্ত করতে সাহায্য করেছিল, যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য শিক্ষণীয় হয়ে ওঠে। প্রদর্শনীটি আরও স্মরণ করিয়ে দেয় যে নুরেমবার্গ ট্রাইব্যুনাল ১৯৪৫ সালের ২০ নভেম্বর শুরু হয়েছিল এবং এটি ছিল জনসমক্ষে উন্মুক্ত, যা আন্তর্জাতিক বিচার ব্যবস্থার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে যুগপৎ অনুবাদের পেশার বিকাশে সহায়তা করেছিল।

উৎসসমূহ

  • Jornal Estado de Minas | Not�cias Online

  • Estado de Minas

  • APIC

  • Ministério Federal das Relações Externas

আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?

আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।