প্রথাগত মুখস্থ বিদ্যার বাইরে গিয়ে, প্রগতিশীল শিক্ষা শিক্ষার্থীদের কেন্দ্র করে শেখার উপর জোর দেয়। এই শিক্ষাব্যবস্থা শিক্ষার্থীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ, সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা এবং সামগ্রিক বিকাশের উপর আলোকপাত করে, যেখানে বৌদ্ধিক, সামাজিক এবং মানসিক বৃদ্ধি একে অপরের সাথে জড়িত। প্রকল্প-ভিত্তিক শিক্ষা, যেখানে শিক্ষার্থীরা বাস্তব-জগতের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করে, এবং অনুসন্ধান-ভিত্তিক শিক্ষা, যা শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে এবং স্বাধীনভাবে উত্তর খুঁজতে উৎসাহিত করে, এই পদ্ধতির মূল ভিত্তি। এছাড়াও, হাতে-কলমে অভিজ্ঞতা অর্জনের মাধ্যমে শেখা, যা শিক্ষার্থীদের সরাসরি অংশগ্রহণের মাধ্যমে জ্ঞান অর্জনে সহায়তা করে, তাও প্রগতিশীল শিক্ষার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। এই পদ্ধতিগুলি শিক্ষার্থীদের আজীবন শিক্ষার্থী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করে, যারা পরিবর্তনশীল ভবিষ্যতের জন্য অভিযোজন এবং সমস্যা সমাধানের দক্ষতায় পারদর্শী হবে।
গবেষণায় দেখা গেছে যে, প্রগতিশীল শিক্ষা শিক্ষার্থীদের মধ্যে সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা এবং সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। উদাহরণস্বরূপ, গবেষণায় দেখা গেছে যে, প্রগতিশীল পদ্ধতি ব্যবহারকারী স্কুলগুলি শিক্ষার্থীদের উচ্চতর ব্যস্ততা এবং সহযোগিতার দক্ষতা বিকাশে আরও ভালো ফলাফল প্রদর্শন করে। এটি শিক্ষার্থীদের তাদের নিজস্ব আগ্রহ এবং প্রেরণা অনুযায়ী শিখতে উৎসাহিত করে, যা তাদের শেখার প্রতি আরও বেশি মনোযোগী করে তোলে। প্রগতিশীল শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বাস্তব-জগতের বিভিন্ন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয় এবং সেগুলোর সমাধান খোঁজার চেষ্টা করে। এর ফলে, তারা কেবল তাত্ত্বিক জ্ঞানই অর্জন করে না, বরং ব্যবহারিক ক্ষেত্রেও নিজেদের দক্ষ করে তোলে। এই পদ্ধতিটি শিক্ষার্থীদের মধ্যে সহযোগিতা এবং দলবদ্ধভাবে কাজ করার মানসিকতাও তৈরি করে, যা তাদের সামাজিক দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়ক।
প্রগতিশীল শিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা কেবল পুঁথিগত বিদ্যায় সীমাবদ্ধ থাকে না, বরং তারা সৃজনশীলতা, উদ্ভাবনী ক্ষমতা এবং স্বাধীনভাবে চিন্তা করার দক্ষতা অর্জন করে। এই শিক্ষাব্যবস্থা শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করে এবং তাদের নিজেদের শেখার প্রক্রিয়ার উপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে। এর ফলে, তারা ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য আরও ভালোভাবে প্রস্তুত হতে পারে। একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, প্রগতিশীল শিক্ষা শিক্ষার্থীদের মধ্যে শেখার আগ্রহ বাড়াতে এবং তাদের সামগ্রিক শিক্ষাগত পারফরম্যান্স উন্নত করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। এটি শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্ম-সচেতনতা এবং দায়িত্ববোধ বিকাশেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।