তেলেঙ্গানার করিমনগর জেলার রাচাপাল্লি গ্রামের একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় গণিত শিক্ষায় এক অসাধারণ সাফল্য অর্জন করেছে। এখানে খেলনা-ভিত্তিক শিক্ষণ পদ্ধতির প্রয়োগ শিক্ষার্থীদের জন্য শেখার প্রক্রিয়াকে আরও আকর্ষণীয় ও ইন্টারেক্টিভ করে তুলেছে।
প্রধান শিক্ষক সমুদ্রলা বংশী মোহনচার্য এই রূপান্তরের নেতৃত্ব দিয়েছেন। গণিতকে একটি চ্যালেঞ্জিং বিষয় হিসেবে বিবেচনা করে, মোহনচার্য পাজল, স্মৃতিশক্তির খেলা এবং সংখ্যা বিষয়ক চ্যালেঞ্জের মতো পদ্ধতি ব্যবহার করে একটি আনন্দদায়ক শিক্ষার পরিবেশ তৈরি করেছেন। শিশুদের স্বাভাবিক খেলার প্রবণতাকে কাজে লাগিয়ে তাদের গাণিতিক দক্ষতা বাড়ানোর এই উদ্ভাবনী পদ্ধতি অত্যন্ত কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে।
এই নতুন পদ্ধতির প্রভাবে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১০ থেকে ৫৬-তে উন্নীত হয়েছে এবং গণিতে তারা অসাধারণ ফল লাভ করেছে, এমনকি নিখুঁত নম্বরও পেয়েছে। পূর্বে যারা বেসরকারি বিদ্যালয়গুলিতে তাদের সন্তানদের পাঠাতেন, সেইসব অভিভাবকরাও এখন সরকারি বিদ্যালয়ের দৃশ্যমান ইতিবাচক পরিবর্তন দেখে তাদের সন্তানদের এখানে ভর্তি করছেন। খেলনা-ভিত্তিক এই মডেলের স্থায়িত্ব নিশ্চিত করতে মোহনচার্য ব্যক্তিগতভাবে ১ লক্ষ টাকার বেশি বিনিয়োগ করে শিক্ষামূলক সরঞ্জাম ও উপকরণ তৈরি করেছেন।
এই উদ্যোগ শেখার প্রতি শিশুদের ভালোবাসা বাড়িয়েছে এবং দেখিয়েছে যে সরকারি বিদ্যালয়গুলিও সৃজনশীলতা ও নিষ্ঠার মাধ্যমে उत्कृष्ट ফলাফল অর্জন করতে পারে। খেলনা-ভিত্তিক শিক্ষার সুবিধাগুলি বিশ্বজুড়ে স্বীকৃত। এই পদ্ধতিতে শিশুরা কেবল আনন্দই পায় না, বরং তাদের সৃজনশীলতা, কল্পনাশক্তি এবং সমস্যা সমাধানের ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়। এটি তাদের সামাজিক ও আবেগিক বিকাশেও সহায়ক, কারণ তারা খেলার মাধ্যমে একে অপরের সাথে যোগাযোগ করতে, ভাগ করে নিতে এবং সহযোগিতা করতে শেখে। গবেষণায় দেখা গেছে যে এই ধরনের পরিবেশ শিশুদের জ্ঞানীয় নমনীয়তা, স্মৃতিশক্তি এবং আত্ম-নিয়ন্ত্রণ বাড়াতে সাহায্য করে। তেলেঙ্গানার এই উদ্যোগ প্রমাণ করে যে, উপযুক্ত পদ্ধতি এবং শিক্ষকের আন্তরিক প্রচেষ্টায় সরকারি শিক্ষাব্যবস্থায়ও বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনা সম্ভব, যা শিশুদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গঠনে সহায়ক হবে।