যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রীয় সফরে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া মঙ্গলবার, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৫ সন্ধ্যায় লন্ডন স্ট্যানস্টেড বিমানবন্দরে অবতরণ করেছেন। এটি একটি বিরল ঘটনা যেখানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট তার দ্বিতীয় মেয়াদে দ্বিতীয়বার রাষ্ট্রীয় সফরে যুক্তরাজ্য আসছেন, যা দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে এক বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। এই সফরটি ১৭ থেকে ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ পর্যন্ত চলবে এবং এতে বিভিন্ন আনুষ্ঠানিক অনুষ্ঠান ও বৈঠক অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
বুধবার, সেপ্টেম্বর ১৭, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং ফার্স্ট লেডি মেলানিয়াকে উইন্ডসর ক্যাসেলে রাজা চার্লস তৃতীয় এবং রানী ক্যামিলা উষ্ণ অভ্যর্থনা জানাবেন। অনুষ্ঠানে সামরিক অভিবাদন এবং সন্ধ্যায় একটি রাষ্ট্রীয় ভোজের আয়োজন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার, সেপ্টেম্বর ১৮, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন চেকার্সে প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সাথে সাক্ষাৎ করবেন। এই বৈঠকটি দুই দেশের মধ্যেকার সম্পর্ক আরও জোরদার করার লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত হবে এবং এতে আর্থিক কেন্দ্রগুলোর মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য একটি 'ট্রান্সআটলান্টিক টাস্কফোর্স' সহ যৌথ উদ্যোগ নিয়ে আলোচনা করা হবে।
যুক্তরাজ্য এই রাষ্ট্রীয় সফরকালে উল্লেখযোগ্য বাণিজ্য ও প্রযুক্তি চুক্তি সম্পাদনের আশা করছে। এর মধ্যে রয়েছে ব্ল্যাকরকের ব্রিটিশ ডেটা সেন্টারগুলিতে ট্রিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ এবং গুগল (অ্যালফাবেট) এর যুক্তরাজ্যে এআই (AI) উদ্যোগে ৫ বিলিয়ন পাউন্ড বিনিয়োগের পরিকল্পনা। এছাড়াও, একটি পারমাণবিক শক্তি অংশীদারিত্ব ঘোষণা করা হয়েছে, যেখানে হার্টলপুলে একটি নতুন পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে। ব্ল্যাকরক আগামী বছরে যুক্তরাজ্যের বাজারে ৭ বিলিয়ন পাউন্ড মূলধন বিনিয়োগ করার প্রত্যাশা করছে, যার মধ্যে ৫০০ মিলিয়ন পাউন্ড ডেটা সেন্টারগুলিতে বিনিয়োগ করা হবে। অ্যালফাবেট আগামী দুই বছরে যুক্তরাজ্যের এআই গবেষণা, ডিপমাইন্ড সম্প্রসারণ এবং সবুজ ডেটা সেন্টারগুলিতে ৫ বিলিয়ন পাউন্ড বিনিয়োগ করবে, যা যুক্তরাজ্যের বিশ্বব্যাপী এআই নেতা হওয়ার লক্ষ্যকে শক্তিশালী করবে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই দ্বিতীয় রাষ্ট্রীয় সফরটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, কারণ সাধারণত দ্বিতীয় মেয়াদে মার্কিন প্রেসিডেন্টরা এমন সফর করেন না। এটি দুই দেশের মধ্যেকার বিশেষ সম্পর্ক এবং তাদের বন্ধন আরও দৃঢ় করার ইচ্ছাকে প্রতিফলিত করে। প্রধানমন্ত্রী স্টারমারের জন্য এই সফরটি অভ্যন্তরীণভাবে গুরুত্বপূর্ণ। সাম্প্রতিক রাজনৈতিক কেলেঙ্কারি এবং জনপ্রিয়তা হ্রাসের মধ্যে, এই সফরের সাফল্য তার রাজনৈতিক অবস্থান পুনরুদ্ধারে সহায়ক হতে পারে এবং যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক সম্পর্ককে শক্তিশালী করতে পারে। এই রাষ্ট্রীয় সফরের সুনির্দিষ্ট ফলাফল এখনও নির্ধারণ করা কঠিন হলেও, পরিকল্পিত বৈঠক এবং উদ্যোগগুলি বিভিন্ন খাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যের মধ্যেকার সহযোগিতা গভীর করার যৌথ প্রচেষ্টাকে নির্দেশ করে।