মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ তারিখে ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার ব্যাপক বিমান হামলার সময় পোল্যান্ডের আকাশসীমা লঙ্ঘনকারী একাধিক রুশ ড্রোন সফলভাবে ভূপাতিত করেছে পোল্যান্ডের সামরিক বাহিনী। এই ঘটনাটি ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে পোল্যান্ডের প্রথম সক্রিয় সামরিক পদক্ষেপ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্ক এই সামরিক পদক্ষেপের বিষয়টি নিশ্চিত করে ড্রোনগুলোকে "আমাদের নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্য একটি বাস্তব হুমকি সৃষ্টিকারী আগ্রাসনের কাজ" হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য একটি জরুরি সরকারি বৈঠক আহ্বান করেছেন। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ওয়াডিসিও কোসিনিয়াক-কামিসজ জানিয়েছেন যে পোল্যান্ড ন্যাটো কমান্ডের সাথে নিরন্তর যোগাযোগ রাখছে এবং সর্বোচ্চ সতর্কতার অবস্থার উপর জোর দিয়েছেন। তিনি ধ্বংসাবশেষ উদ্ধারের জন্য আঞ্চলিক প্রতিরক্ষা বাহিনীকে মোতায়েন করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেছেন।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ওয়ারশ চোপিন বিমানবন্দর সহ দেশের চারটি গুরুত্বপূর্ণ বিমানবন্দর সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য বিমান চলাচল অন্য রুটে সরিয়ে নেওয়া হয়। ইউএস ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার সাথে সম্পর্কিত অপরিকল্পিত সামরিক কার্যকলাপের কারণে এই বিমানবন্দরগুলো বন্ধ থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করে একটি নোটিশে (NOTAM) জানিয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্ক রুবিও এই অনুপ্রবেশের বিষয়ে অবহিত হয়েছেন, যা আঞ্চলিক উত্তেজনার আন্তর্জাতিক উদ্বেগ তুলে ধরেছে। হোয়াইট হাউস এবং অন্যান্য মার্কিন সংস্থাগুলো এখনও এই ঘটনা সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করেনি। এই ঘটনাটি এই অঞ্চলে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে, যেখানে পোল্যান্ড তার সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা রক্ষায় দৃঢ় পদক্ষেপ নিয়েছে।
এই ঘটনাটি ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় হিসেবে দেখা হচ্ছে, যা ন্যাটো জোটের সদস্য দেশগুলোর মধ্যে সমন্বয় ও সতর্কতার প্রয়োজনীয়তা বাড়িয়ে দিয়েছে। পোল্যান্ডের এই পদক্ষেপ রাশিয়ার আগ্রাসী নীতির বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী বার্তা প্রদান করেছে এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় দেশটির অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে।