ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে তার দেশে "সামরিক আগ্রাসন" প্রস্তুতির অভিযোগ করেছেন এবং বলেছেন যে ভেনেজুয়েলার আত্মরক্ষার বৈধ অধিকার রয়েছে। মাদুরো জানান, আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী ভেনেজুয়েলার চলমান সামরিক আগ্রাসনের জবাব দেওয়ার অধিকার আছে। তিনি দুই দেশের সম্পর্ককে "ভাঙ্গা" হিসেবে বর্ণনা করেছেন এবং মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওকে "মৃত্যু ও যুদ্ধের অধিপতি" বলে আখ্যায়িত করেছেন।
এই ঘোষণাটি মার্কিন প্রশাসনের ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে মাদক চোরাকারবারীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অজুহাতে সামরিক বাহিনী মোতায়েনের পর এসেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ তারিখে একটি "মাদক বহনকারী নৌকায়" মার্কিন হামলার কথা ঘোষণা করেছিলেন, যেখানে ১১ জন "নারকো-সন্ত্রাসী" নিহত হয়েছিল। মার্কিন প্রেসিডেন্ট এই সংগঠনটিকে "সন্ত্রাসী" হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। ভেনেজুয়েলা গত ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ তারিখে তাদের আঞ্চলিক জলসীমার মধ্যে একটি মার্কিন জাহাজের আট ঘন্টা ধরে একটি ভেনেজুয়েলার মাছ ধরার নৌকায় আরোহণের ঘটনাকে নিন্দা করেছে।
ওয়াশিংটন নিকোলাস মাদুরোকে মাদক পাচার নেটওয়ার্কের প্রধান হিসেবে অভিযুক্ত করেছে এবং সম্প্রতি তার গ্রেপ্তারের জন্য পুরস্কারের পরিমাণ ৫০ মিলিয়ন ডলারে উন্নীত করেছে। ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার প্রতিক্রিয়ায়, মাদুরো মার্কিন "হুমকি" মোকাবেলার জন্য গত ২১ আগস্ট, ২০২৫ তারিখে জনগণকে, মিলিশিয়া এবং রিজার্ভসহ সবাইকে সাধারণ সমাবেশের আহ্বান জানিয়েছেন। ক্যারিবীয় সাগরের ভেনেজুয়েলার উপকূলের কাছে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ মোতায়েনের পরিপ্রেক্ষিতে এই সমাবেশ ডাকা হয়েছিল।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ভেনেজুয়েলার মধ্যে সম্পর্ক সাম্প্রতিক মাসগুলোতে উল্লেখযোগ্যভাবে খারাপ হয়েছে, যেখানে পারস্পরিক অভিযোগ এবং এই অঞ্চলে সামরিক কর্মকাণ্ড দেখা গেছে। পরিস্থিতি এখনও উত্তেজনাপূর্ণ রয়েছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই সংকটকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই কর্মকাণ্ডের প্রতিক্রিয়ায়, ভেনেজুয়েলা তাদের জাতীয় সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সাড়ে চার মিলিয়ন মিলিশিয়া সদস্যকে মোতায়েন করার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মাদক পাচার রোধের অজুহাতে ক্যারিবীয় অঞ্চলে নৌবাহিনীর উপস্থিতি বাড়িয়েছে, যা এই অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে উত্তেজনা বাড়িয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক মাদক চোরাকারবারীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অংশ হিসেবে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এই অঞ্চলে মার্কিন নৌবাহিনীর উপস্থিতি বৃদ্ধি ভেনেজুয়েলার উপর চাপ সৃষ্টি করছে এবং দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বাড়িয়ে তুলছে।