৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ তারিখে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জাপানের সাথে একটি যুগান্তকারী বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করেন। এই চুক্তিটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জাপানি আমদানির উপর ১৫% শুল্ক নির্ধারণ করে এবং জাপানের পক্ষ থেকে মার্কিন অর্থনীতিতে ৫৫০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি নিশ্চিত করে। এই পদক্ষেপটি দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ককে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করেছে।
চুক্তির মূল বিষয়বস্তু অনুসারে, জাপানের প্রায় সকল পণ্যের উপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একটি ১৫% শুল্ক কার্যকর হবে। স্বয়ংচালিত পণ্য, স্বয়ংচালিত যন্ত্রাংশ, মহাকাশ পণ্য, জেনেরিক ফার্মাসিউটিক্যালস এবং কিছু নির্দিষ্ট প্রাকৃতিক সম্পদের উপর এই শুল্ক প্রযোজ্য হবে। এই শুল্কের হার আগস্ট ৭, ২০২৫ থেকে কার্যকর হবে, যা পূর্বের হার থেকে উল্লেখযোগ্যভাবে কম। জাপানের পক্ষ থেকে, এই চুক্তির একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো মার্কিন অর্থনীতিতে ৫৫০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি। এই অর্থ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি পরিকাঠামো, সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদন, খনিজ প্রক্রিয়াকরণ, ফার্মাসিউটিক্যাল উৎপাদন এবং জাহাজ নির্মাণ শিল্পের মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলিতে বিনিয়োগ করা হবে। এই বিনিয়োগের ফলে লক্ষ লক্ষ নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে এবং সরবরাহ শৃঙ্খল শক্তিশালী হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এই বাণিজ্য চুক্তি স্বয়ংচালিত শিল্পের জন্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। টয়োটা এবং হোন্ডার মতো জাপানি গাড়ি প্রস্তুতকারকরা শুল্ক হ্রাসের ফলে উপকৃত হবে। অন্যদিকে, হুন্দাই এবং কিয়া-এর মতো দক্ষিণ কোরিয়ার গাড়ি প্রস্তুতকারকদের উপর ২৫% শুল্ক বহাল থাকবে, যা তাদের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে। এই পরিবর্তনগুলি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ গাড়ি উৎপাদন বৃদ্ধি এবং ইস্পাতের চাহিদা বাড়াতে পারে।
এই চুক্তিটি জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার জন্য একটি রাজনৈতিক সুযোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে। যদিও তিনি সম্প্রতি নির্বাচনে দলের পরাজয়ের সম্মুখীন হয়েছেন এবং তার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত, এই বাণিজ্য চুক্তি তাকে কিছুটা স্বস্তি দিতে পারে। জুলাই মাসে একটি খসড়া চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল এবং এই আনুষ্ঠানিকতা তাকে অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সহায়তা করতে পারে।
এই চুক্তির অধীনে, জাপান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে বার্ষিক ৮ বিলিয়ন ডলার মূল্যের চাল, ভুট্টা, সয়াবিন এবং অন্যান্য কৃষি পণ্য কিনবে। এছাড়াও, জাপান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-নির্মিত বাণিজ্যিক বিমান এবং প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম ক্রয় করতে সম্মত হয়েছে। এই বিনিয়োগের একটি অংশ, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকার দ্বারা নির্বাচিত হবে, তা দীর্ঘমেয়াদী অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং সমৃদ্ধি নিশ্চিত করবে।