রাশিয়ার ক্রমবর্ধমান ড্রোন অনুপ্রবেশের প্রতিক্রিয়ায়, ন্যাটো (NATO) এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন (EU) সদস্য রাষ্ট্রগুলি তাদের পূর্ব সীমান্তে একটি সমন্বিত 'ড্রোন প্রাচীর' স্থাপনের পরিকল্পনাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এই উদ্যোগে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) চালিত সেন্সর নেটওয়ার্ক, জ্যামার এবং ইন্টারসেপ্টর অন্তর্ভুক্ত থাকবে, যা আকাশপথে শত্রুদের মোকাবিলায় নজরদারি ও প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বৃদ্ধি করবে।
ইউক্রেনও এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সহ-নির্মাতা হিসেবে যুক্ত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এস্তোনিয়া বাল্টিক ড্রোন প্রাচীর নামে একটি প্রস্তাব দিয়েছে, যা ফিনল্যান্ড, নরওয়ে এবং পোল্যান্ডের সমর্থন পেয়েছে। এই প্রকল্পের লক্ষ্য হল এক বছরের মধ্যে একটি প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলা, তবে এর জন্য ইউরোপীয় তহবিলের অনুমোদন প্রয়োজন। জার্মানিতে, পররাষ্ট্র নীতি বিশেষজ্ঞ নরবার্ট রটজেন ন্যাটো-র সমগ্র পূর্ব সীমান্ত বরাবর একটি 'ড্রোন প্রাচীর' স্থাপনের পক্ষে জোরালো সওয়াল করেছেন, যা ড্রোন হুমকি থেকে সুরক্ষা এবং বিভিন্ন ধরণের ড্রোন সংগ্রহের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নও ন্যাটো-র পূর্ব সীমান্তে একটি 'ড্রোন প্রাচীর' স্থাপনের বিষয়টি বিবেচনা করছে। ইউরোপীয় কমিশনের প্রতিরক্ষা ও মহাকাশ বিষয়ক কমিশনার অ্যান্ড্রিয়াস কুবিলিয়াস শীঘ্রই প্রতিরক্ষা প্রধানদের নিয়ে একটি বৈঠক আহ্বান করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। ইউক্রেন পূর্ব প্রতিরক্ষা ঢাল (Eastern Defense Shield) তৈরিতে সহ-নির্মাতা হিসেবে যুক্ত হবে, যা পূর্ব সীমান্তে আকাশপথে নিরাপত্তা জোরদার করবে। এই 'ড্রোন প্রাচীর' উদ্যোগটি রাশিয়ার আগ্রাসন প্রতিরোধ এবং যেকোনো ভবিষ্যৎ আক্রমণের বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী প্রতিরক্ষা রেখা তৈরি করার একটি প্রচেষ্টা।
যদিও প্রকল্পের সুনির্দিষ্ট বাস্তবায়ন সময়সীমা, প্রযুক্তিগত ক্ষমতা এবং অর্থায়নের বিবরণ এখনও স্পষ্ট নয়, তবে বিশ্লেষকদের মতে এটি এক বছরের মধ্যে তৈরি করা যেতে পারে। ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রের অভিজ্ঞতা এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করা হচ্ছে, কারণ তারা সাশ্রয়ী মূল্যের ড্রোন প্রতিরক্ষা সমাধানে পারদর্শী। এই সমন্বিত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ন্যাটো-র পূর্ব সীমান্তকে আরও সুরক্ষিত করবে এবং ইউরোপের নিরাপত্তা কৌশলে একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন হবে।