ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের মানবাধিকার বিষয়ক একটি প্রতিবেদনকে পক্ষপাতদুষ্ট এবং ভুল তথ্যে ভরা বলে তীব্রভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে। ১৪ই আগস্ট, ২০২৫ তারিখে, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন যে এই প্রতিবেদনটি ভারতের গণতান্ত্রিক কাঠামো, বহুত্ববাদী সমাজ এবং মানবাধিকার সুরক্ষার জন্য দেশের শক্তিশালী প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থার প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সীমিত উপলব্ধির প্রতিফলন। ভারত এই ধরনের মূল্যায়নকে গুরুত্ব দেয় না এবং নিজেদের জনগণের মানবাধিকার উন্নয়নে মনোনিবেশ করছে বলে তিনি জানান। মার্কিন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে ভারত সরকার মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ী কর্মকর্তাদের চিহ্নিত ও শাস্তি দেওয়ার ক্ষেত্রে 'ন্যূনতম বিশ্বাসযোগ্য পদক্ষেপ' নিয়েছে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এবং হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতো সংস্থাগুলি সংখ্যালঘুদের প্রতি ভারতের আচরণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং বৈষম্যমূলক নীতির অভিযোগ তুলেছে।
অন্যদিকে, বাণিজ্য ও প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রেও দুই দেশের মধ্যে কিছু উত্তেজনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কের প্রতিক্রিয়ায়, ভারত রাশিয়ার তেল আমদানি কমানোর বিষয়টি বিবেচনা করছে। এই বাণিজ্য ঘর্ষণ প্রতিরক্ষা ক্রয় সংক্রান্ত আলোচনায় কিছুটা প্রভাব ফেলেছে। জেনারেল ডায়নামিকস, রেথিয়ন, লকহিড মার্টিন এবং বোয়িং-এর মতো প্রধান মার্কিন সংস্থাগুলির সাথে প্রতিরক্ষা ক্রয় সংক্রান্ত আলোচনা স্থগিত রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে, যদিও সরকারিভাবে বলা হচ্ছে এই আলোচনাগুলি স্বাভাবিকভাবে চলছে। এই চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও, ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের ব্যাপক বৈশ্বিক কৌশলগত অংশীদারিত্বের উপর জোর দিচ্ছে। উভয় দেশ পারস্পরিক বিশ্বাস, অভিন্ন স্বার্থ এবং জনগণের মধ্যেকার সম্পর্ককে শক্তিশালী করার উপর গুরুত্ব আরোপ করছে। প্রতিরক্ষা সহযোগিতা এবং একটি ২+২ অন্তর্বর্তীকালীন বৈঠকের পরিকল্পনা অব্যাহত রয়েছে। মার্কিন প্রতিবেদনটি ২০২৪ সালের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আলোকপাত করেছে, যেখানে ভারতের मणिपुर রাজ্যের জাতিগত সংঘাতের মতো বিষয়গুলিও উল্লেখ করা হয়েছে। ভারত সরকার এই প্রতিবেদনকে প্রত্যাখ্যান করলেও, দুই দেশের মধ্যেকার প্রতিরক্ষা সম্পর্ক, যেমন তেজাশ বিমান প্রকল্পের জন্য ইঞ্জিন সরবরাহ এবং অন্যান্য প্রতিরক্ষা চুক্তি নিয়ে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে।