প্যারিস, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ – রাশিয়ার সাথে সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি পরবর্তী ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে ইউরোপীয় নেতারা সৈন্য মোতায়েনের ব্যাপারে ঐকমত্যে পৌঁছেছেন। "Coalition of the Willing" নামে পরিচিত এই উদ্যোগে ২৬টি দেশ তাদের সৈন্য পাঠানোর অঙ্গীকার করেছে, যা শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে ইউক্রেনের নিরাপত্তা বিধানে সহায়ক হবে।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ প্যারিসে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান যে, এই সৈন্য মোতায়েনের উদ্দেশ্য রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ করা নয়, বরং শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং একটি শক্তিশালী কৌশলগত বার্তা প্রদান করা। ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর সমর্থনের আনুষ্ঠানিকতার ওপর জোর দেন এবং একটি শক্তিশালী ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করেন। তিনি আরও বলেন যে, রাশিয়া শান্তি উদ্যোগ প্রত্যাখ্যান করছে। এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য হলো রাশিয়ার আগ্রাসন প্রতিরোধ করা এবং ইউক্রেনের দীর্ঘমেয়াদী নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
এই "Coalition of the Willing" উদ্যোগটি মূলত ২০২৫ সালের মার্চ মাসে ব্রিটেন ও ফ্রান্স কর্তৃক শুরু হয়েছিল, যার উদ্দেশ্য ছিল শান্তি চুক্তি হলে ইউক্রেনকে রাশিয়ার ভবিষ্যৎ আগ্রাসন থেকে রক্ষা করা। এই সম্মেলনে জাপান, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড সহ বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেইন এবং কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট আন্তোনিও কস্তা এই আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। অস্ট্রিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিয়েটে মাইনল-রাইসিংার ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফও এই আলোচনায় অংশ নিয়েছেন।
প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ নিশ্চিত করেছেন যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই পরিকল্পনার অংশ হতে আগ্রহী এবং আগামী দিনগুলোতে এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা চূড়ান্ত করা হবে। তিনি আরও বলেন যে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাশিয়ার উপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য কাজ করছে। এই পদক্ষেপটি ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তবে, সৈন্য মোতায়েনের সঠিক বিন্যাস এবং কার্যপরিধি এখনও নির্ধারণ করা হয়নি, যা ভবিষ্যৎ আলোচনার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই উদ্যোগটি ইউক্রেনের স্থিতিশীলতা এবং ইউরোপের বৃহত্তর নিরাপত্তা কাঠামোর জন্য একটি ইতিবাচক সংকেত বহন করে।