বেলারুশ ও ইরানের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার: কৌশলগত অংশীদারিত্ব ও আঞ্চলিক সহযোগিতা

সম্পাদনা করেছেন: Татьяна Гуринович

মিনস্ক, বেলারুশ – মঙ্গলবার, আগস্ট ২০, ২০২৫ তারিখে, বেলারুশের রাজধানী মিনস্কে এক আনুষ্ঠানিক সফরে ইরানের রাষ্ট্রপতি মাসউদ পেজে शकিয়ান বেলারুশের রাষ্ট্রপতি আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোর সাথে সাক্ষাৎ করেছেন। এই বৈঠকটি উভয় দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত হয়। পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার মুখে থাকা এই দুই দেশ বাণিজ্য, বিনিয়োগ, শিল্প, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, শিক্ষা, সংস্কৃতি, পর্যটন এবং প্রতিরক্ষা সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য নতুন চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।

ইরানের রাষ্ট্রপতি পেজে शकিয়ান মিনস্কে তাঁর সফরের সময় বলেন যে, বেলারুশ একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ এবং কৌশলগত ইউরেশিয়া অঞ্চলের একটি নির্ভরযোগ্য অংশীদার। তিনি উল্লেখ করেন যে, ইরান ও বেলারুশ একতরফাবাদ এবং এর ধ্বংসাত্মক পরিণতির বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য একে অপরের সাথে সহযোগিতা করতে পারে। তিনি আরও বলেন যে, দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য ২০২৩-২০২৬ সালের একটি ব্যাপক সহযোগিতা রোডম্যাপ রয়েছে এবং এই সফর সেই সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে।

বেলারুশের রাষ্ট্রপতি লুকাশেঙ্কো বলেন যে, বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে মিনস্ক ও তেহরান সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য ধারাবাহিক এবং সুচিন্তিত পদক্ষেপ নিচ্ছে এবং প্রতিটি নতুন চ্যালেঞ্জকে সুযোগে পরিণত করার জন্য কাজ করছে। তিনি উল্লেখ করেন যে, দুই দেশ প্রতিরক্ষা, সামরিক-প্রযুক্তিগত সহযোগিতা সহ যেকোনো বিষয়ে আলোচনা করতে প্রস্তুত। তিনি আরও বলেন যে, বেলারুশ ও ইরান একটি কৌশলগত অংশীদারিত্ব চুক্তি নিয়ে কাজ করছে।

এই সফরের অংশ হিসেবে, উভয় দেশের মধ্যে ১২টি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে রাজনীতি ও আন্তর্জাতিক আইন, স্বাস্থ্য ও ফার্মাসিউটিক্যালস, শিল্প, পরিবেশ ও মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল, পর্যটন, সংস্কৃতি, মিডিয়া এবং বিনিয়োগ। এছাড়াও, দুই রাষ্ট্রপতি একটি যৌথ বিবৃতি স্বাক্ষর করেছেন, যা দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ককে আরও গভীর করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে। এই চুক্তিগুলি পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার প্রভাব মোকাবিলা এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করার জন্য উভয় দেশের দৃঢ় সংকল্পের প্রতিফলন।

ইরান ও বেলারুশ উভয়ই পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার অধীনে রয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে, তাদের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি কেবল অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক বন্ধনকেই শক্তিশালী করে না, বরং আন্তর্জাতিক মঞ্চে তাদের স্বাধীন অবস্থানকেও তুলে ধরে। উভয় দেশই ইউরেশীয় অর্থনৈতিক ইউনিয়ন (EAEU), সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা (SCO), এবং ব্রিকস (BRICS) এর মতো বহুপাক্ষিক প্ল্যাটফর্মগুলিতে তাদের সহযোগিতা জোরদার করার উপর গুরুত্ব আরোপ করেছে। এই সহযোগিতা দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং প্রযুক্তি হস্তান্তরের মাধ্যমে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়ক হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ঐতিহাসিকভাবে, ১৯৯৩ সাল থেকে ইরান ও বেলারুশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক বিদ্যমান। এই দীর্ঘ সময়ে, উভয় দেশ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা করেছে এবং নিয়মিত উচ্চ-পর্যায়ের সফর বিনিময় করেছে। ২০২৩ সালের মার্চ মাসে বেলারুশের রাষ্ট্রপতি লুকাশেঙ্কোর ইরান সফরকালে ২০২৩-২০২৬ সালের জন্য একটি ব্যাপক সহযোগিতা রোডম্যাপ স্বাক্ষরিত হয়েছিল, যা তাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে একটি নতুন স্তরে নিয়ে যাওয়ার পথ প্রশস্ত করেছে। এই সফরগুলি দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এবং কৌশলগত অংশীদারিত্বের গভীরতাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।

উৎসসমূহ

  • ana.ir

  • خبرگزاری مهر

আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?

আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।