মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) একটি যুগান্তকারী বাণিজ্য কাঠামো চুক্তি চূড়ান্ত করেছে। এই চুক্তিটি দুই পক্ষের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে স্থিতিশীলতা এবং পূর্বাভাসযোগ্যতা বাড়ানোর লক্ষ্যে কাজ করবে, যা উভয় অঞ্চলের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করবে এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও গভীর করবে।
চুক্তির মূল বিষয়গুলির মধ্যে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বেশিরভাগ ইউরোপীয় আমদানির উপর একটি ১৫% শুল্ক আরোপ করা। এই শুল্কের আওতায় গাড়ি, ফার্মাসিউটিক্যালস, সেমিকন্ডাক্টর এবং কাঠ সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ খাত অন্তর্ভুক্ত থাকবে। তবে, গাড়ির ক্ষেত্রে এই শুল্ক হ্রাস তখনই কার্যকর হবে যখন ইউরোপীয় ইউনিয়ন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিল্প পণ্য, সামুদ্রিক খাদ্য এবং কৃষি পণ্যের উপর শুল্ক কমাবে। এই শর্তটি উভয় পক্ষের মধ্যে একটি ভারসাম্যপূর্ণ বাণিজ্য সম্পর্ক নিশ্চিত করবে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন ২০২৮ সালের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি পণ্যের জন্য ৭৫০ বিলিয়ন ডলার এবং এআই চিপের জন্য ৪০ বিলিয়ন ডলার কেনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এছাড়াও, ইউরোপীয় সংস্থাগুলি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত খাতে ৬০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই বিশাল বিনিয়োগ মার্কিন অর্থনীতিতে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে এবং প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করবে।
চুক্তিটি ডিজিটাল বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। উভয় পক্ষ ডিজিটাল বাণিজ্য বাধা দূর করতে সম্মত হয়েছে এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন নেটওয়ার্ক ব্যবহার ফি আরোপ না করার নিশ্চয়তা দিয়েছে। এটি ডিজিটাল বাজারে আরও উন্মুক্ত পরিবেশ তৈরি করবে।
এই চুক্তির ফলে transatlantic বাণিজ্য, বিশেষ করে মহাকাশযান এবং উৎপাদন খাতে উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়বে। এটি উভয় অঞ্চলের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করবে এবং দীর্ঘমেয়াদী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পথ প্রশস্ত করবে। এই চুক্তিটি কেবল বাণিজ্য সংক্রান্ত বিষয়গুলিকেই সম্বোধন করে না, বরং এটি উভয় পক্ষের মধ্যে কৌশলগত সহযোগিতা এবং অংশীদারিত্বকেও জোরদার করে, যা বিশ্ব অর্থনীতিতে একটি ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে আশা করা হচ্ছে।