নয়াদিল্লি, ভারত – ১৯ আগস্ট, ২০২৫ – ভারত ও চীন সীমান্ত বাণিজ্য পুনরায় চালু করতে এবং সীমান্ত ব্যবস্থাপনা উন্নত করার জন্য একটি নতুন কর্মপদ্ধতি প্রতিষ্ঠার বিষয়ে সম্মত হয়েছে। নয়া দিল্লিতে অনুষ্ঠিত ২৪তম বিশেষ প্রতিনিধিদের সংলাপের (Special Representatives' dialogue) পর এই সিদ্ধান্তগুলো নেওয়া হয়। আলোচনায় উভয় দেশ সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, বাণিজ্য এবং জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধির উপর জোর দেয়।
সীমান্ত প্রশ্ন এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নত করার লক্ষ্যে, উভয় পক্ষ সীমান্ত ব্যবস্থাপনা উন্নত করার জন্য ওয়ার্কিং মেকানিজম ফর কনসালটেশন অ্যান্ড কোঅপারেশন অন ইন্ডিয়া-চায়না বর্ডার অ্যাফেয়ার্স (WMCC)-এর অধীনে একটি নতুন ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই গ্রুপটি সীমান্ত অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে কাজ করবে।
একটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হলো তিন বছর ধরে স্থগিত থাকা সীমান্ত বাণিজ্য পুনরায় চালু করা। এই বাণিজ্য লিপুলেখ পাস, শিপকি লা পাস এবং নাথু লা পাসের মাধ্যমে পরিচালিত হবে। এই পদক্ষেপটি সীমান্ত অঞ্চলের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করবে এবং দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক আদান-প্রদান বৃদ্ধি করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এছাড়াও, উভয় দেশ শীঘ্রই ভারত ও চীনের মধ্যে সরাসরি বিমান পরিষেবা পুনরায় চালু করার বিষয়ে সম্মত হয়েছে, যা জনগণের মধ্যে যোগাযোগ এবং পর্যটন বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করার জন্যও পদক্ষেপ নেওয়া হবে, যা পর্যটক, ব্যবসায়ী এবং অন্যান্য ভ্রমণকারীদের জন্য সুবিধা বয়ে আনবে।
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই এবং ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল এই আলোচনায় নেতৃত্ব দেন। ওয়াং ই বলেছেন যে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ককে প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে না দেখে অংশীদার হিসেবে দেখা উচিত। তিনি আরও উল্লেখ করেন যে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সীমান্ত অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে, যা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের জন্য একটি ইতিবাচক দিক।
অজিত দোভালও এই আলোচনাকে সফল বলে অভিহিত করেছেন এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আসন্ন চীন সফরের (SCO Summit) উপর আলোকপাত করেছেন, যা দুই দেশের মধ্যে আরও সহযোগিতার পথ খুলে দেবে।
এই সংলাপের ফলস্বরূপ, ভারত ও চীন উভয় দেশই একে অপরের কূটনৈতিক অনুষ্ঠান আয়োজনে সহায়তা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। চীন ২০২৬ সালে ভারতের ব্রিকস (BRICS) শীর্ষ সম্মেলন আয়োজনে সহায়তা করবে এবং ভারত ২০২৭ সালে চীনের ব্রিকস সম্মেলন আয়োজনে সমর্থন জানাবে। এই পদক্ষেপগুলো ভারত ও চীনের মধ্যে দীর্ঘদিনের উত্তেজনা প্রশমিত করতে এবং একটি স্থিতিশীল ও সহযোগিতামূলক সম্পর্ক গড়ে তুলতে সহায়ক হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই আলোচনাগুলি উভয় দেশের জন্য একটি "গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ" তৈরি করেছে, যা বিশ্ব শান্তি ও সমৃদ্ধিতে অবদান রাখবে।