১৪ আগস্ট, ২০২৫ তারিখে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং প্যারাগুয়ে একটি "নিরাপদ তৃতীয় দেশ চুক্তি" (Safe Third Country Agreement - STCA) স্বাক্ষর করেছে। এই চুক্তির অধীনে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় প্রার্থনা করা ব্যক্তিরা প্যারাগুয়েতে তাদের দাবির প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারবেন। এই উদ্যোগটি অবৈধ অভিবাসনের বোঝা ভাগ করে নেওয়ার এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আশ্রয় ব্যবস্থার অপব্যবহার রোধ করার লক্ষ্যে নেওয়া হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছেন, "ট্রাম্প প্রশাসন আর মার্কিন আশ্রয় ব্যবস্থার অপব্যবহার সহ্য করবে না।" তিনি আরও উল্লেখ করেন যে এই চুক্তিটি প্যারাগুয়ের সাথে একটি বৃহত্তর কৌশলগত অংশীদারিত্বের অংশ, যা নিরাপত্তা, বাণিজ্য এবং বিনিয়োগের মতো ক্ষেত্রগুলিতেও বিস্তৃত। প্যারাগুয়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবেন রামিরেজ লেজকানো এই চুক্তিকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে অভিহিত করেছেন, যা গণতন্ত্র এবং মানবাধিকারের মতো অভিন্ন মূল্যবোধের উপর ভিত্তি করে তৈরি।
এই ধরনের "নিরাপদ তৃতীয় দেশ চুক্তি" (STCA) অভিবাসন নীতিতে একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এনেছে। এই চুক্তিগুলির মূল উদ্দেশ্য হল আশ্রয় প্রার্থীদের তাদের যাত্রাপথে প্রথম নিরাপদ দেশে তাদের আশ্রয় প্রার্থনা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে বাধ্য করা, যাতে তারা একাধিক দেশে আবেদন করার সুযোগ না পায় এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আশ্রয় ব্যবস্থার উপর চাপ কমে। তবে, এই ধরনের চুক্তিগুলি প্রায়শই সমালোচনার সম্মুখীন হয়। বিশেষজ্ঞরা উল্লেখ করেছেন যে, এই চুক্তিগুলি কার্যকরভাবে কার্যকর করার জন্য তৃতীয় দেশগুলির পর্যাপ্ত ক্ষমতা এবং সুষ্ঠুভাবে আশ্রয় আবেদন প্রক্রিয়া করার সক্ষমতা থাকা অপরিহার্য। অতীতে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক মধ্য আমেরিকার দেশগুলির সাথে স্বাক্ষরিত অনুরূপ চুক্তিগুলি সমালোচিত হয়েছে কারণ সেই দেশগুলির আশ্রয় আবেদন প্রক্রিয়া করার সীমিত ক্ষমতা ছিল এবং সেখানে অভিবাসীরা প্রায়শই সহিংসতা ও বৈষম্যের শিকার হত। ঐতিহাসিকভাবে, ট্রাম্প প্রশাসন অভিবাসন নীতি কঠোর করার উপর জোর দিয়েছে। তার প্রথম মেয়াদে, তিনি শরণার্থী ভর্তির সীমা কমিয়ে দিয়েছিলেন এবং আশ্রয় আবেদন প্রক্রিয়াকে আরও কঠিন করে তুলেছিলেন। এই নতুন চুক্তিটি সেই নীতিরই একটি ধারাবাহিকতা বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও এই চুক্তিটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্ত ব্যবস্থাপনায় চাপ কমাতে সহায়ক হতে পারে, তবে প্যারাগুয়ের আশ্রয় প্রার্থীদের অধিকার এবং তাদের সুরক্ষার বিষয়ে উদ্বেগ থেকেই যায়। এই চুক্তির দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব এবং কার্যকারিতা ভবিষ্যতে আরও স্পষ্ট হবে।