নতুন দিল্লি ও বেইজিংয়ের মধ্যে কূটনৈতিক আলোচনা শুরু: ওয়াং ইয়ের দিল্লি সফর

সম্পাদনা করেছেন: Ирина iryna_blgka blgka

চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই রবিবার, আগস্ট ১৮, ২০২৫ তারিখে নয়াদিল্লিতে পৌঁছেছেন। দুই দিনের এই সফরটি সীমান্ত আলোচনা পুনরায় শুরু এবং পূর্বের চুক্তিগুলোকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এটি ভারত-চীন সীমান্ত ইস্যুতে বিশেষ প্রতিনিধিদের (SR) ২৪তম দফা আলোচনার সূচনা করবে। ওয়াং ই ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সাথে সীমান্ত পরিস্থিতি এবং প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (LAC) বরাবর স্থিতিশীলতা নিয়ে আলোচনা করবেন। এছাড়াও তিনি ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্করের সাথে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এবং পারস্পরিক স্বার্থের বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করবেন।

এই সফরটি ৩১শে আগস্ট থেকে ১লা সেপ্টেম্বর, ২০২৫ পর্যন্ত চীনের তিয়ানজিনে অনুষ্ঠিতব্য সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা (SCO) সম্মেলনের পূর্বে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন এবং সেখানে তিনি চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সাথে সাক্ষাৎ করতে পারেন। ২০২০ সালের গালওয়ান উপত্যকার সংঘর্ষের পর থেকে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক কিছুটা টানাপোড়েনের মধ্যে ছিল। এর আগের বিশেষ প্রতিনিধিদের (SR) আলোচনায় যৌথ টহল এবং পাঁচ বছরের অচলাবস্থা নিরসনের বিষয়ে কিছু চুক্তি হয়েছিল।

ওয়াং ইয়ের এই সফর এমন এক সময়ে হচ্ছে যখন ভারত রাশিয়ার কাছ থেকে অপরিশোধিত তেল কেনার বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চাপের মুখে রয়েছে। এই পরিস্থিতি ভারতকে চীনের সাথে সম্পর্ক আরও জোরদার করতে উৎসাহিত করতে পারে, যা SCO সম্মেলন এবং পুনরায় চালু হওয়া সরাসরি বিমান পরিষেবা থেকে বোঝা যায়। এই কূটনৈতিক আলোচনাগুলি ভারত-চীন সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। সীমান্ত অঞ্চলে শান্তি বজায় রাখা এবং দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করাই মূল লক্ষ্য।

এই সফরের প্রেক্ষাপটে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য নীতি ভারতের উপর প্রভাব ফেলছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভারত-বিরোধী শুল্ক নীতির কারণে ভারত-মার্কিন সম্পর্ক কিছুটা শীতল হয়েছে, যা নয়াদিল্লিকে বেইজিংয়ের দিকে আরও আকৃষ্ট করতে পারে। বিশেষ করে, রাশিয়ার তেল আমদানির উপর মার্কিন শুল্ক আরোপের ফলে ভারত চীনের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করার সুযোগ খুঁজছে। সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা (SCO) সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী মোদীর সম্ভাব্য অংশগ্রহণ এবং দ্বিপাক্ষিক বিমান পরিষেবা পুনরায় চালু হওয়ার ঘটনাগুলি এই প্রবণতাকে আরও শক্তিশালী করছে।

ভারত ও চীনের মধ্যে সীমান্ত নিয়ে আলোচনা নতুন আস্থা-নির্মাণ ব্যবস্থার উপর জোর দেবে, যা দীর্ঘস্থায়ী শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে। ২০২০ সালের গালওয়ান উপত্যকার সংঘর্ষের পর থেকে দুই দেশ তাদের সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছে। এই আলোচনাগুলি সেই প্রচেষ্টারই একটি অংশ। তিয়ানজিনে অনুষ্ঠিতব্য SCO সম্মেলন ভারতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উপলক্ষ। এই সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী মোদী চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সাথে অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করতে পারেন, যা দুই দেশের মধ্যেকার জটিল বিষয়গুলি সরাসরি সমাধানের একটি সুযোগ করে দেবে। এই সম্মেলনটি SCO-এর ইতিহাসে বৃহত্তম সম্মেলন হতে চলেছে, যেখানে ২০টিরও বেশি দেশের নেতা এবং ১০টি আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানরা উপস্থিত থাকবেন।

উৎসসমূহ

  • MoneyControl

  • Reuters

  • The Week

  • India Today

  • Reuters

  • Reuters

আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?

আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।