কর্মক্ষেত্রে অ্যালগরিদমিক ব্যবস্থাপনার ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন (EU) একটি নতুন নির্দেশিকা প্রণয়নের পথে অগ্রসর হচ্ছে। ইউরোপীয় পার্লামেন্টের কর্মসংস্থান ও সামাজিক বিষয়ক কমিটি একটি খসড়া প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যা এই লক্ষ্যে একটি নির্দেশিকা প্রস্তাব করে। এই উদ্যোগটি কর্মক্ষেত্রে স্বয়ংক্রিয় সিস্টেম, বিশেষ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) ব্যবহারের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা, ন্যায্যতা এবং কর্মীদের অধিকার সুরক্ষার উপর জোর দেয়। প্রস্তাবিত নির্দেশিকাটি কর্মীদের উপর নজরদারি, মূল্যায়ন বা সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে AI-এর ব্যবহারকে বিস্তৃতভাবে সংজ্ঞায়িত করে এবং এটি কেবল কর্মচারী নয়, স্বাধীনভাবে কর্মরত ব্যক্তিদেরও অন্তর্ভুক্ত করে।
নির্দেশিকার মূল বিধানগুলির মধ্যে রয়েছে কর্মীদের অ্যালগরিদমিক সিস্টেম সম্পর্কে বাধ্যতামূলকভাবে তথ্য জানানো, নতুন সিস্টেম স্থাপন বা আপডেটের আগে পরামর্শ গ্রহণ এবং মানব তত্ত্বাবধানের প্রয়োজনীয়তা। কর্মীদের এই ধরনের সিস্টেম দ্বারা গৃহীত বা প্রভাবিত সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যা চাওয়ার অধিকার থাকবে। এছাড়াও, নির্দেশিকাটি সংবেদনশীল ব্যক্তিগত ডেটা, যেমন মানসিক অবস্থা, নিউরো-সার্ভেলেন্স এবং ব্যক্তিগত কথোপকথন প্রক্রিয়াকরণ নিষিদ্ধ করার লক্ষ্য রাখে। এই নতুন প্রস্তাবটি বিদ্যমান EU আইন, যেমন GDPR এবং AI Act-এর মধ্যেকার নিয়ন্ত্রক ফাঁকগুলি পূরণ করার চেষ্টা করে, যা কর্মক্ষেত্রে অ্যালগরিদমিক ব্যবস্থাপনার নির্দিষ্ট দিকগুলি বিশেষভাবে লক্ষ্য করে না। একটি সমীক্ষা অনুসারে, অ্যালগরিদমিক ব্যবস্থাপনা নিয়োগ, কাজের সময়সূচী, কর্মীদের পর্যবেক্ষণ, মূল্যায়ন এবং এমনকি বরখাস্তের মতো বিভিন্ন ব্যবস্থাপনার কাজে ব্যবহৃত হয়। এই নির্দেশিকাটি কর্মীদের ডেটা গোপনীয়তা এবং মর্যাদাকে সম্মান করে একটি ভারসাম্যপূর্ণ কর্মপরিবেশ তৈরির উপর গুরুত্ব আরোপ করে। খসড়া প্রতিবেদনটি ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে কর্মসংস্থান কমিটিতে ভোটের জন্য পেশ করা হবে এবং তারপরে পার্লামেন্টের পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে অনুমোদনের জন্য যাবে। যদি এটি অনুমোদিত হয়, তবে ইউরোপীয় কমিশনকে আনুষ্ঠানিকভাবে একটি নির্দেশিকা উপস্থাপনের জন্য অনুরোধ করা হবে। এই আইন কার্যকর হলে, EU-এর মধ্যে কর্মরত নিয়োগকর্তাদের তাদের AI সিস্টেমগুলি এই নতুন নিয়মাবলীর সাথে সঙ্গতিপূর্ণ কিনা তা নিশ্চিত করতে হবে, অন্যথায় বিশ্বব্যাপী আয়ের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে।