জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) বিষয়ক দুটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ চালু করেছে: ‘ইউএন ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইন্টারন্যাশনাল সায়েন্টিফিক প্যানেল অন এআই’ এবং ‘গ্লোবাল ডায়ালগ অন এআই গভর্নেন্স’। এই পদক্ষেপগুলোর মূল লক্ষ্য হলো এআই প্রযুক্তির সুবিধাগুলো সর্বাধিক করা এবং একই সাথে এর সম্ভাব্য ঝুঁকিগুলো কার্যকরভাবে মোকাবিলা করা।
সায়েন্টিফিক প্যানেল এআই নীতি নির্ধারণে স্বাধীন মূল্যায়ন প্রদান করবে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এআই সম্পর্কিত চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় সহায়তা করবে। অন্যদিকে, গ্লোবাল ডায়ালগ রাষ্ট্র ও সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে, যেখানে তারা মানবজাতির উপর এআই-এর প্রভাব নিয়ে আলোচনা করতে পারবে। এর মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী এআই পরিচালনায় সমন্বয় এবং মানবাধিকার সুরক্ষা নিশ্চিত করা হবে।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এই উদ্যোগগুলোকে সমর্থন করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি সতর্ক করেছেন যে, এআই-এর ক্ষেত্রে ‘আছে’ এবং ‘নেই’ এমন দেশগুলোর মধ্যে বৈষম্য সৃষ্টি হলে তা অস্থিতিশীলতা ডেকে আনবে। তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, এআই প্রযুক্তি এমন এক গতিতে অগ্রসর হচ্ছে যা আমাদের শাসনের ক্ষমতাকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে, যা জবাবদিহিতা, সমতা, নিরাপত্তা এবং মানবতার ভূমিকা নিয়ে মৌলিক প্রশ্ন উত্থাপন করছে।
এই নতুন উদ্যোগগুলো ‘গ্লোবাল ডিজিটাল কম্প্যাক্ট’-এর আলোকে নেওয়া হয়েছে, যা এআই পরিচালনার জন্য একটি সার্বজনীনভাবে স্বীকৃত কাঠামো। এই কম্প্যাক্টটি জাতিসংঘে বৈজ্ঞানিক প্যানেল প্রতিষ্ঠা এবং বৈশ্বিক সংলাপ শুরু করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। ARTICLE 19-এর মতো সংস্থাগুলো এই উদ্যোগগুলোতে মানবাধিকার, অন্তর্ভুক্তি, স্বচ্ছতা এবং এআই-এর গুরুতর ঝুঁকিগুলো মোকাবিলার ওপর জোর দিয়েছে।
এই পদক্ষেপগুলো মানবজাতির বৃহত্তর কল্যাণে দায়িত্বশীল এআই পরিচালনার জন্য একটি উল্লেখযোগ্য বৈশ্বিক প্রচেষ্টা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। জাতিসংঘের এই উদ্যোগগুলো এআই প্রযুক্তির নৈতিক ও নিরাপদ ব্যবহার নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এটি বিভিন্ন দেশের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি করবে এবং এআই-এর সুবিধাগুলো যেন সকলের কাছে সমানভাবে পৌঁছায়, তা নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে। এই প্যানেল এবং সংলাপের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এআই-এর ভবিষ্যৎ রূপরেখা তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।